close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

হাসপাতালে স্বামীর মরদেহ রেখে পালালেন স্ত্রী

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মাদারীপুরের রাজৈরে প্রেম করে বিয়ে করা স্বামীর মরদেহ হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়েছেন স্ত্রী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পরকীয়ার জেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে প..

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার রাজৈর হাসপাতালে মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালেই সৃষ্টি হয় এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির। উত্তর দ্বারাদিয়া গ্রামের এক নারী তার স্বামীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তি হলেন হালিম খান (৫৫), নগর-গোয়ালদি গ্রামের মৃত বালা খানের ছেলে।

চার বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন হালিম খান ও রেশমা বেগম (৪০)। পরে তারা সামাজিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রেশমা উত্তর দ্বারাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সোমেদ চৌকিদারের মেয়ে। কিন্তু এই প্রেমের পরিণতি বড়ই করুণ ছিল।

হাসপাতাল সূত্র, পুলিশ এবং পারিবারিক লোকজন জানান, হালিম ও রেশমার দাম্পত্য জীবনে বেশ কিছু দিন ধরেই অশান্তি চলছিল। মূলত একটি মোটরসাইকেল কেনা নিয়ে পারিবারিক কলহ শুরু হলেও, সম্প্রতি রেশমার পরকীয়ার অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

সোমবার বিকেলে হালিম খান তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। পরদিন সকালে তাকে রাজৈর হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় নিয়ে আসেন রেশমা এবং তার পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক হালিমকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরই যা ঘটল, তা সকলকে হতবাক করে দেয়।

স্বামী হালিমের মরদেহ রেখে স্ত্রী রেশমা এবং তার পরিবারের সদস্যরা চুপিসারে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। এমন ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে বিস্ময় ও সন্দেহ উভয়ের জন্ম দিয়েছে।

নিহতের বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, “আমার ভাইকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমার ভাইয়ের স্ত্রী রেশমা পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল, এটাই মৃত্যুর মূল কারণ। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলেই প্রকৃত সত্য উদঘাটন সম্ভব হবে।

ঘটনার পর থেকে হালিমের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। ফোন কিংবা সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আরও সন্দেহজনক করে তুলেছে।

রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ খান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।

স্বামী-স্ত্রীর প্রেমের বিয়ে যে এক সময় মৃত্যু এবং রহস্যের পথে গড়াবে, তা হয়তো কেউই ভাবেননি। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়, বরং সমাজে পরকীয়া, পারিবারিক অস্থিরতা ও আইনের প্রতি অবহেলার প্রতিচ্ছবি।

এই ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একদিকে ভাই হারানোর শোকে কাতর পরিবার, অন্যদিকে পালিয়ে যাওয়া স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সন্দেহ। এখন সকলের চোখ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও পুলিশের তদন্তে।

No comments found


News Card Generator