close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

হাজারো বিনিয়োগকারীর দাবির ঝড়! মতিঝিলের রাস্তায় শেয়ারবাজারে পুঁজি রক্ষার জন্য ১১ দফা দাবি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মতিঝিল, ৩ ফেব্রুয়ারি: শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা আজ পুঁজি রক্ষার দাবিতে ঢাকার মতিঝিলের রাস্তায় সমাবেশ করেছেন। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্ট
মতিঝিল, ৩ ফেব্রুয়ারি: শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা আজ পুঁজি রক্ষার দাবিতে ঢাকার মতিঝিলের রাস্তায় সমাবেশ করেছেন। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে হাজারো বিনিয়োগকারী অংশগ্রহণ করেন। এই সমাবেশে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। তারা পুঁজিবাজারে চলমান সংকটের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সুষ্ঠু পদক্ষেপের প্রতি জোর দাবি জানান। ১১ দফা দাবিতে বিনিয়োগকারীরা ১. বিএসইসি ও আইসিবির চেয়ারম্যানের অপসারণ: পুঁজিবাজার রক্ষায় বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) এবং আইসিবি (ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এর বর্তমান চেয়ারম্যানদের দ্রুত অপসারণ করে নতুন এবং যোগ্য চেয়ারম্যান নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে। ২. গেইন-ট্যাক্স প্রত্যাহার: বিনিয়োগকারীদের মতে, বর্তমান মার্কেট পরিস্থিতি সঠিকভাবে স্হিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত গেইন-ট্যাক্স সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা উচিত। ৩. অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে: বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, পুঁজিবাজারে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করা প্রয়োজন, যেমন: তদন্ত বা জেড গ্রুপে কোম্পানিগুলোর নাম প্রেরণ করা। ৪. জেড ক্যাটাগরির সংস্কার: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো যদি জেড ক্যাটাগরিতে চলে যায়, তবে তা বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকর। তাই এই বিধানটি সংস্কার করা আবশ্যক। ৫. লভ্যাংশের ন্যূনতম হার: কোম্পানিগুলোর আয়ের অন্তত ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের প্রদান করতে হবে। ৬. বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ কার্যক্রম: ব্যাংক, ফাইন্যান্স, ইন্স্যুরেন্স, মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং আইসিবি সহ অন্যান্য বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পরিমাণ শতভাগ কার্যকর করতে হবে। ৭. টাস্ক ফোর্সের সংস্কার জানানো: পুঁজিবাজারে সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত মিডিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্টদের জানাতে হবে। ৮. নতুন শেয়ার ধারণের নীতি: কোম্পানিগুলোর শেয়ার ধারণের ন্যূনতম হার ৩০ শতাংশ হতে হবে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। ৯. মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দ্রুত বাজারে প্রবেশ: বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) এর দায়িত্ব অন্তত ১০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজারে বিনিয়োগ নিয়ে আসা। ১০. লভ্যাংশ না দিলে বোর্ড পুনর্গঠন: তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হলে তার বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে। ১১. পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার: পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য শক্তিশালী এবং দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ ও হতাশা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা একের পর এক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন এবং তারা দাবি করছেন যে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে তাদের পুঁজি পুরোপুরি হারিয়ে যাবে। এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা শেয়ারবাজারে নতুন সংস্কারের আশ্বাসে উৎসাহী হলেও, তারা আরো কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষায় আছেন। বিনিয়োগকারীদের এ আন্দোলন কেবল তাদের পুঁজি রক্ষার জন্যই নয়, বরং দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যত স্থিতিশীলতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এছাড়া, পুঁজিবাজারের সংকট নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতামতও সামনে আসছে, যারা মনে করছেন দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব। শেষ কথা এখন দেখার বিষয় হলো, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কতটা দ্রুত ও কার্যকরভাবে এই দাবিগুলো মেনে নেবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে কিনা। শেয়ারবাজারে এই আন্দোলন নতুন এক দিক নির্দেশনার সংকেত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
Ingen kommentarer fundet