close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

হাবীবুল্লাহ কলেজের উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমানের লাশ মিললো বাসায়!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকার উত্তরখানে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড! হাবীবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মো. সাইফুর রহমান ভূঁঞাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দম্পতি। প্রথমে আশ্রয় দেওয়ার নামে বাসায় নিয়ে গেলেও ..

ঢাকার উত্তরখানে সংঘটিত এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্তব্ধ সবাই। হাবীবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মো. সাইফুর রহমান ভূঁঞাকে তার ভাড়া বাসায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দম্পতি। অভিযোগ রয়েছে, ওই দম্পতিকে আশ্রয় দেওয়ার নামে তিনি তাদের বাসায় নিয়ে গিয়ে নারীর প্রতি ‘আপত্তিকর আচরণ’ করছিলেন। শেষমেষ সেই ঘটনার জেরে তার নির্মম মৃত্যু হয়।

ঘটনার সূত্রপাত কমলাপুর রেলস্টেশনে। টাকা-পয়সা হারিয়ে দিশেহারা এক দম্পতি অসহায়ের মতো বসে ছিলেন। তাদের করুণ অবস্থা দেখে সাহায্যের হাত বাড়ান কলেজের উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমান। তিনি দম্পতিকে তার বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলেন এবং থাকার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন।

পুলিশ সূত্র জানায়, বাসায় নেওয়ার পর থেকেই ওই তরুণীর প্রতি অনৈতিক আচরণ করতে থাকেন সাইফুর রহমান। নানা অজুহাতে স্বামীকে বাইরে পাঠিয়ে স্ত্রীর গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করতেন তিনি।

সবশেষ রোববার রাতে ওই নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমান। এ সময় তার স্বামী টের পেয়ে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ক্ষুব্ধ স্বামী হাতের কাছে থাকা ধারালো বঁটি দিয়ে সাইফুর রহমানকে উপর্যুপরি কুপিয়ে পালিয়ে যান।

🔴 পুলিশের অভিযানে ধরা পড়লো ঘাতক দম্পতি
হত্যার পর থেকে পলাতক ছিল ওই দম্পতি। তবে মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তারা স্বীকার করেছেন, সাইফুর রহমান বারবার যৌন নির্যাতন করার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি একবার ধর্ষণও করেছেন বলে দাবি করেছেন ওই নারী।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, "আমরা সন্দেহভাজন দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। তদন্তের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করছি। খুব শিগগিরই হত্যার পেছনের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।"

🔴 কীভাবে দম্পতি সাইফুর রহমানের বাসায় গেল?
২৮ ফেব্রুয়ারি কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় অবস্থায় বসেছিলেন ওই দম্পতি। তাদের অবস্থা দেখে সাহায্যের প্রস্তাব দেন সাইফুর রহমান। তিনি তাদের জানান, তার ছয়তলা বাড়ি ও গাড়ি রয়েছে এবং চাকরির ব্যবস্থাও করতে পারেন। একপর্যায়ে ওই দম্পতি রাজি হয়ে যান।

সাইফুর রহমান জানান, তার বাসায় স্ত্রী-সন্তান আছে, কিন্তু বাসায় পৌঁছে তারা জানতে পারেন, আসলে তিনি একাই থাকেন। তখন তিনি অজুহাত দেন যে, তার স্ত্রী-সন্তান বেড়াতে গেছেন। এরপর থেকেই তরুণীর প্রতি তার আপত্তিকর আচরণ শুরু হয়।

🔴 নিহত শিক্ষকের পরিবার যা বলছে
নিহত শিক্ষকের স্ত্রী জানান, "সাইফুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে আমাদের থেকে আলাদা থাকতেন। কোথায় থাকেন, জিজ্ঞেস করলেও তিনি উত্তর দিতেন না। পুলিশ যখন জানালো যে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তখনই আমরা জানতে পারলাম সে কী ধরনের কাজ করছিল।"

সোমবার রাতে নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ভূঁঞা উত্তরখান থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, "পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা তার ভাইয়ের বাসায় ঢুকে তাকে হত্যা করেছে।"

🔴 তদন্তের অগ্রগতি
পুলিশ জানিয়েছে, দম্পতির দেওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিহত শিক্ষকের অতীত সম্পর্ক ও কার্যকলাপ নিয়েও তদন্ত চলছে।

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক সমাজের অনেকেই হতবাক হয়ে বলেছেন, "একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন অমানবিক কাজের অভিযোগ আসতে পারে, তা বিশ্বাসই করা যায় না!"

ঘটনার সঠিক কারণ এবং এর সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা, তা জানতে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

Tidak ada komentar yang ditemukan