close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

গোপালগঞ্জে উত্তপ্ত পরিস্থিতি: সহিংসতার পর ফের কারফিউ বাড়ল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Curfew has been extended in Gopalganj after deadly clashes between NCP and Awami League supporters. Streets remain tense amid military presence and public fear.

গোপালগঞ্জে এনসিপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষের রক্তাক্ত প্রেক্ষাপটে ফের বাড়ানো হলো কারফিউ। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে নিষেধাজ্ঞা, জনমনে আতঙ্ক।

গোপালগঞ্জে একাধিক প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর পুনরায় বাড়ানো হয়েছে কারফিউয়ের সময়সীমা। শনিবার (১৯ জুলাই) রাত ৮টা থেকে রোববার (২০ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান শনিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে এক সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর আগে একইদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ আংশিক শিথিল করা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ফের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় প্রশাসন।

এর পেছনে রয়েছে গত ১৬ জুলাই এনসিপি’র ‘জুলাই পদযাত্রা’ কেন্দ্রিক সহিংসতা। ওইদিন গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এনসিপি নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে গোপালগঞ্জ শহর পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান কমপক্ষে চারজন। আহতদের মধ্যে আরও একজন বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান, যার ফলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচজনে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সংঘর্ষের সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেতে গোপালগঞ্জে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে সেনাবাহিনীর একটি সাঁজোয়া যান তাদের নিরাপদে স্থানান্তর করে শহরের বাইরে নিয়ে যায়।

সহিংসতার পরপরই প্রথমে গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার কারফিউ কিছুটা শিথিল করা হলেও পরবর্তীতে আবারও তা জারি রাখা হয় নতুন নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়, তবে এরপর ফের তা কার্যকর হয়। রাত ১১টার দিকে জেলা প্রশাসন জানায় যে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ আংশিক শিথিল থাকবে, কিন্তু রাত ৮টার পর আবার তা পুনরায় কার্যকর হবে।

বর্তমানে গোপালগঞ্জ শহরের রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য। জনগণের চলাচল সীমিত। আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেনা ও পুলিশ বাহিনী টহলে নিয়োজিত রয়েছে।

এমন একটি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেও নিরাপত্তা বাহিনীর অনুমতি ছাড়া চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না।

গোপালগঞ্জের বর্তমান পরিস্থিতি দেশজুড়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সহিংসতা ও কারফিউ রাজনৈতিক অস্থিরতার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরছে, যা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।

لم يتم العثور على تعليقات