গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে প্রশাসনের ব্যর্থতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
গোপালগঞ্জে এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে বর্বরোচিত হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এই হামলাকে চরম লজ্জাজনক এবং প্রশাসনের পরিকল্পিত ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই ঘটনা দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়। গোপালগঞ্জে হামলার আশঙ্কা আগে থেকেই থাকলেও প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় ছিল। এটা নিছক অবহেলা নয়—বরং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি অপারেশন। প্রশাসনের এই ভূমিকাই প্রমাণ করে, তারা নিরপেক্ষ নয়।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের সংগঠন এনসিপি যখন দেশব্যাপী গণজাগরণ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তখনই তাদের ওপর গোপালগঞ্জে পরিকল্পিত হামলা চালানো হলো। এটা ফ্যাসিবাদী শক্তির একটি ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত।
ইসলামী আন্দোলনের আমির আরও বলেন, হামলাকারীরা কারা, সেই প্রশ্ন আজ আর জনগণের অজানা নয়। যারা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে মরিয়া, তারাই গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতিকে দমন করতে এ ধরনের হামলায় লিপ্ত হয়েছে। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যেকটি স্তরে দায় রয়েছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, হাসিনার পতনের পরেও যারা গোপালগঞ্জে সহিংসতার নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। মিডিয়ায় তাদের পরিচয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে, যা গভীরতর ষড়যন্ত্রেরই অংশ। সংবাদমাধ্যমের উচিত এসব সন্ত্রাসীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে জাতির সামনে তুলে ধরা।
তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণ এখন আর চুপ থাকবে না। অভ্যুত্থানকে দমন করে যারা ফ্যাসিবাদের ধারক-বাহক হয়ে উঠেছে, তাদের বিচার শুধু ঢাকার কিছু ঘটনায় সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। দেশের প্রত্যেক অঞ্চলে যারা স্বৈরাচারী হামলার সঙ্গে যুক্ত, সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নইলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
বিবৃতির শেষ অংশে তিনি প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে বলেন, জনগণের ধৈর্যের সীমা শেষের পথে। গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়ানো ছাত্রদের ওপর এই ধরনের হামলা আর সহ্য করা হবে না। জনগণ এবার প্রস্তুত—বিচার না হলে দুর্বার প্রতিরোধ হবে।