জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "যারা গণহত্যা চালিয়ে আমার ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার না করে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন হতে হবে।"
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ শহরের মুক্তির সোপানে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশাসনকে উদ্দেশ করে হুঁশিয়ার করে পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, দেশের প্রশাসন এখন নিরপেক্ষ নয়। বরং তারা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, "আমরা গণঅভ্যুত্থানের পর চেয়েছিলাম একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন, পুলিশ ও বিচারব্যবস্থা। কিন্তু আমরা দেখছি, প্রশাসনের কর্মকর্তারা এখন একটি দলের হয়ে কাজ করছেন।" সতর্ক করে দিয়ে তিনি আরও বলেন, "আপনারা নির্দিষ্ট কোনো দলের হয়ে কাজ করবেন না। এটা রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক।"
নাহিদ ইসলাম বলেন, "বর্তমান সংবিধান দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিভক্ত করেছে। এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে।"
তিনি বলেন, "এই সংবিধান পরিবর্তন করে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। সেই সংবিধানে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান এবং ব্রিটিশবিরোধী ১৯৪৭ সালের জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।"
সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের কথা উল্লেখ করে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, "এই শিল্প আপনার-আমার গর্ব হতে পারতো, কিন্তু আমরা তা বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছি।"
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, "আমরা আগামীর বাংলাদেশে সিরাজগঞ্জের শিল্প ও ঐতিহ্য শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরবো। এ জেলার মানুষের কর্মসংস্থান, সুচিকিৎসা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।"
জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "শহীদ পরিবারগুলোকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা শুধু বর্তমান সরকারের নয়—যেই সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তাদের এই দায়িত্ব নিতে হবে।"
তিনি জানান, "আমরা এজন্যই জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি। সেই ঘোষণাপত্রে থাকবে শহীদদের ও তাদের পরিবারের কথা, যা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।"
পথসভা শেষে এনসিপির নেতাকর্মীরা জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।