close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

গলাচিপায় সংযোগ সেতু ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ঝুঁকিতে ডিঙি নৌকায় পারাপার..

Md Hamidul Islam avatar   
Md Hamidul Islam
পটুয়াখালীর গলাচিপায় পানপট্টি ও সদর ইউনিয়নের একমাত্র সংযোগ সেতু ভেঙে পড়ায় দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শ্রমজীবী মানুষ—সবাই এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ..

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ও সদর ইউনিয়নের সংযোগ সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় দুই ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমজীবীসহ শত শত মানুষ এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় খাল পার হচ্ছেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই পাড়ের হাজারো বাসিন্দা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ সেতুটি সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অবশেষে সেতুর বড় একটি অংশ ভেঙে পড়ে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বোয়ালিয়া খালের ওপর লোহার কংক্রিটের এ সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুটি দুই ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল। প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও ছোট যানবাহন এ সেতু দিয়ে চলাচল করত। প্রায় এক মাস আগে সেতুর মাঝখানে ফাটল ধরে ভেঙে যায়। এরপরও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছিল। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ সেতুর পূর্ব পাশের অংশ সম্পূর্ণ ধসে পড়ে খালে। ফলে দুই পাড়ের যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চলাচলের বিকল্প পথ না থাকায় স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে ডিঙি নৌকা চালু করেছেন। জনপ্রতি ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভয়ে-আতঙ্কে খাল পার হচ্ছেন। এক পাড়ে পাড়ে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, গুচ্ছ গ্রাম ও হাজারো মানুষের বসবাস। অন্যপাড়ে রয়েছে বাজার, উপজেলা শহরের যাতায়াত পথ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, আগে সহজেই সেতু পার হতাম। এখন ডিঙি নৌকায় পার হতে হয়। এতে উঠতেই ভয় লাগে। ছোট নৌকা দোল খায় যে কোনো সময় ডুবে যেতে পারে। রাতে তো আরও দূর্ভোগ আলোর কোন ব্যবস্থা নাই, নৌকা পাওয়া যায় না।

মানসুরা বেগম নামে এক নারী বলেন, প্রতিদিন কয়েকবার যাওয়া-আসা লাগে। এখন একবার পার হতেও কষ্ট হয়। শিশুদের নিয়ে নৌকা পাড় হতে ভয় লাগে যেকোনো সময় ডুবে যেতে পারে নৌকা। 

রিকশাচালক আলী আকবর অভিযোগ করেন, সেতুর ভাঙা অংশে কোনো সতর্কতা সাইনবোর্ড নেই। মাঝে মাঝে অপরিচিত রিকশাচালকরা ভুল করে সেতুর ওপর উঠে যাচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আছে। তার মতে, সাইনবোর্ড টাঙানো থাকলে সেতু ভাঙার বিষয় মানুষ জানতে পারতো।

শিক্ষার্থী সুজন ইসলাম বলেন, নৌকা অন্যপাড়ে থাকলে ঘাটে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এতে দেরিতে স্কুলে পৌঁছাতে হয়। অনেকসময় ক্লাসও মিস হয়। আমরা দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।

পশ্চিম পানপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, ছোট নৌকায় ২-৩ জনের বেশি ওঠা যায় না। ফলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে খাল পার হতে হয়। আমাদের শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হয়। আধুনিক যুগে এসেও নৌকায় পারাপার দুঃখজনক। এখন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মানুষের ভোগান্তির শেষ হবে না। 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আনরা ভাঙা সেতুটি পরিদর্শন করেছি। আপাতত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কাঠের সেতু তৈরি করা হবে। স্থায়ীভাবে নতুন আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, সেতু নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এলজিডির উপজেলা প্রকৌশলী সেতু পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে বর্তমানে সেতু ভেঙে যাওয়ায় দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ছোট ডিঙি নৌকায় পারাপারে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই জরুরি ভিত্তিতে নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator