close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ১৪

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি বিমান ও ড্রোন হামলায় তিন শিশুসহ ১৪ জন নিহত। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে কান্না, আতঙ্ক আর মৃত্যু—নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।..

রবিবারের সকাল গাজাবাসীর জন্য হয়ে উঠেছিল আরেকটি ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন। ইসরায়েলের বিমান ও ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুসহ অন্তত ১৪ জনের। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, রবিবার একযোগে চালানো চারটি বিমান হামলায় ১৩ জন এবং একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নিহত হন।

বিমান হামলায় গাজা শহরের জেয়তুন এলাকায় একটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। এই বাড়িতেই বাস করতেন আবদেল রহমান আজম। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে যা দেখলেন, তা যেন মৃত্যু আর আগুনের বিভীষিকা। তিনি বলেন,
"বাড়িটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আগুন আর ধোঁয়ায় আকাশ কালো হয়ে উঠেছিল। আমরা সেখান থেকে শহীদ দুই শিশুকে উদ্ধার করেছি, আরও ২০ জন আহত অবস্থায় ছিল।

তিনি আরও জানান, কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই হামলা চালানো হয়েছে।আমরা প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে ঘুমাতে যাই। জানি না, ঘুম থেকে জেগে উঠব কি না।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুস শহরে একটি আশ্রয় তাঁবুতে চালানো ড্রোন হামলায় প্রাণ হারায় আরও পাঁচজন। নিহতদের মধ্যে ছিল আরও একটি শিশু। এরই মধ্যে রাফা শহরের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বন্দুক হামলায় মারা যান এক সাধারণ ত্রাণ প্রত্যাশী।

এই ঘটনায় ইসরায়েল সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য না করলেও, দেশটির সেনাবাহিনী বারবার বলে আসছে যে—তারা গাজা থেকে হামাসের সশস্ত্র শাখার নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিতে বদ্ধপরিকর।

রবিবার দুপুরে এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (এক্সে) দেওয়া বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র অভিচয় আদ্রে জানান, গাজার উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশ ‘তাৎক্ষণিকভাবে খালি’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন,
"এই এলাকায় সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে অভিযান চালাবে। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সক্ষমতা ধ্বংস করাই আমাদের লক্ষ্য।"

এই বিবৃতির পর গাজার বহু বাসিন্দা নিজেদের জীবন বাঁচাতে আবারও দক্ষিণের দিকে পালাতে শুরু করে।

গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬,৪১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে বিশাল অংশই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘ বলছে, এই মৃত্যুর সংখ্যা ‘বিশ্বাসযোগ্য’, এবং এর থেকে স্পষ্ট—গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা এক ভয়ংকর স্তরে পৌঁছে গেছে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মহলে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দা জানালেও তা কার্যকর কোনো চাপ তৈরি করতে পারেনি। শিশুদের প্রাণহানি, হাসপাতাল ও স্কুলে হামলা, এবং ত্রাণকেন্দ্রে গুলি চলার মতো ঘটনার পরও বড় দেশগুলোর ভূমিকা অনেকটাই নীরব।

গাজার আকাশে প্রতিদিনই বাজে যুদ্ধবিমানের গর্জন। আতঙ্কের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা শিশুদের ঘুম ভাঙে গোলার শব্দে। কতদিন চলবে এই ভয়াবহতা? মানবতা কি একদিন সত্যিই জেগে উঠবে?

Nessun commento trovato