close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে, জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান ডা. মওদুদের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
At a shadow parliament event in Dhaka, Dr. Maudud Hossain warned of deep-rooted conspiracies to dismantle the anti-fascist alliance and urged people to stay united and alert.

রাজধানীতে এক ছায়া সংসদে ডা. মওদুদ হোসেন অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যকে ভাঙার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। জনগণকে ঐক্য ধরে রাখতে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এফডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’-র ছায়া সংসদে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন বলেছেন, দেশে একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে যার লক্ষ্য ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য বিনষ্ট করা। তিনি বলেন, এই ঐক্য জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এর মধ্যে বিভেদ তৈরি করার যেকোনো প্রচেষ্টা সরাসরি গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার হরণ করার নামান্তর।

শনিবার (১২ জুলাই) জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে নাগরিক সচেতনতা বিষয়ে আয়োজিত এই ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মওদুদ বলেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ যে গুম, খুন, নির্যাতন, নিপীড়নের রাজনীতি চালিয়েছে, তার জন্য শুধু ঘৃণা নয়, তাদের বিচারও অপরিহার্য। পরিবার হারানো মানুষজন উৎসব করতে পারে না, তাদের জীবনে সবসময় একটি অপূর্ণতা থেকে যায়। গুম এক ভয়াবহ, অমানবিক ও ঘৃণ্য অপরাধ, যা সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না।

তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারের যে অনুমতি দিয়েছেন, তা ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকবে। আর যদি কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করে, সেটা হবে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। যেকোনো মূল্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য অটুট রাখতে হবে।

এসময় ডা. মওদুদ বলেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে নিশানা করে পরিকল্পিতভাবে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। তিনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান, যেন সন্ত্রাসী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। আজ পুরো বিশ্ব জানে শেখ হাসিনা একজন স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট শাসক। তিনি কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে চেয়েছেন, গণতন্ত্রকে নয়। তিনি ছিলেন জুলুমের প্রতীক, একজন নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক।

চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, শেখ হাসিনা যদি জুলাই হত্যাকাণ্ডে দণ্ডিত হন, তবে তিনিসহ অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারাবেন। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে এমন একটি নির্বাচন প্রয়োজন যা আওয়ামী লীগ ছাড়াও গ্রহণযোগ্য হয়।

তিনি বলেন, জুলাই আমাদের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি তরুণ প্রজন্মের প্রতীক, প্রতিবাদের আগুন। এই চেতনাকে মুছে ফেলা যাবে না। এই অভ্যুত্থানে ছাত্র ও জনগণের অংশগ্রহণ ছিল ঐতিহাসিক এবং এই বিজয় ফ্যাসিস্টবিরোধী সব শক্তির জন্য প্রেরণা।

অনুষ্ঠানে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে বিজয়ী হয় অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিক দল। অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সিকান্দার রেমান এবং সাংবাদিক আরিফুজ্জামান মামুন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।

ডা. মওদুদের বক্তব্যে স্পষ্ট, দেশে এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো জনগণের ঐক্য এবং সচেতনতা। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে বিভক্ত করতে যারা উঠে পড়ে লেগেছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই এখন সময়ের দাবি।

Hiçbir yorum bulunamadı