close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের ত্রাস: কক্সবাজারে ‘ইনসাফ বাহিনী’র রাজত্ব..

Abir Hossain Sun avatar   
Abir Hossain Sun
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার শহরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এখন হুমকির মুখে। একটি কিশোর গ্যাং-এর আধিপত্য ও অপরাধ প্রবণতার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। শহরের বহারছড়া এলাকার আলোচিত কিশোর গ্যাং লিডার ‘ইনসাফ’ এখন পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্কের নাম। তার নেতৃত্বাধীন 'ইনসাফ বাহিনী' প্রতিদিন নতুন নতুন অপরাধে জড়াচ্ছে, আর স্থানীয় প্রশাসন, রাজনীতিক এবং জনগণ সবাই যেন নিরব দর্শক।

অপরাধী সিন্ডিকেটের উত্থান

সূত্র মতে, ইনসাফের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে একটি ২০-৩০ জনের কিশোর অপরাধী দল। তারা নিজেদেরকে ‘ছাত্রদল’ নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও, বাস্তবে এই গ্যাংয়ের কর্মকাণ্ডের সাথে ছাত্র রাজনীতির কোনো আদর্শগত সংযোগ নেই। বরং এটি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র, যারা দিনে-দুপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং এলাকাবাসীর উপর সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে।

শৈবাল পয়েন্টে ‘একক রাজত্ব’

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কক্সবাজার শহরের শৈবাল পয়েন্ট এখন যেন ইনসাফ বাহিনীর একক নিয়ন্ত্রণে। এখানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ইয়াবা সেবন করে, উচ্চস্বরে মিউজিক বাজিয়ে অশ্লীল ভাষায় কথা বলে এবং পথচারীদের উত্যক্ত করে। বিশেষ করে উঠতি বয়সী তরুণীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভয়ংকর—ইভটিজিং এখন যেন এই বাহিনীর নিত্যদিনের কার্যক্রম।

রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও প্রশাসনের নিরবতা

এই গ্যাংয়ের অন্যতম শক্তির উৎস তাদের রাজনৈতিক পরিচয়। ইনসাফ নিজেকে প্রকাশ্যে ‘ছাত্রদল নেতা’ বলে দাবি করে। ফলে বহুবার তাকে আটক করেও ছেড়ে দিতে হয়েছে, অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে আইনের ফাঁক গলে বারবার রক্ষা পাচ্ছে এই কিশোর অপরাধী।

জনমনে উদ্বেগ ও আতঙ্ক

বাহারছড়ার এক দোকানদার জানান,

> “প্রতিদিন সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। ইনসাফের দল এলে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলে গুম, হামলা বা হুমকির শিকার হতে হয়।”

 

শুধু সাধারণ মানুষই নয়, স্থানীয় স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও এখন আতঙ্কিত। তাদের ভাষায়, “এই গ্যাংয়ের ছেলেরা স্কুল ছুটির সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইভটিজিং করে, কেউ প্রতিবাদ করলে মোবাইলে ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করে।”

প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

সুশীল সমাজের অনেকে বলছেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে যেকোনো অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া হলে পুরো সমাজব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। কক্সবাজারের মত পর্যটননির্ভর একটি শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন গ্যাংদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়া মোটেও মেনে নেওয়া যায় না।

তাদের প্রশ্ন—কীভাবে একজন কিশোর গ্যাং লিডার দিনের পর দিন অস্ত্রসহ ঘুরে বেড়ায়? কে বা কারা তাকে বারবার বাঁচায়?

Hiçbir yorum bulunamadı