জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতারা ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ কখনোই মানুষের মালিকানা ছিল না; এবার তারা জনতার স্বপ্নের দেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সিলেটে অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় এনসিপি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শুক্রবার সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বৃহৎ পদযাত্রা ও সমাবেশে এক দৃঢ় বার্তা দেন, “বাংলাদেশ কখনোই কখনো প্রশাসনের, কখনো ব্যবসায়ীর আবার কখনো সেনাবাহিনীর হয়ে গেছে, কিন্তু কখনোই জনতার দেশের মতো গড়ে ওঠেনি। আমরা চাই এই দেশের মালিক হবে জনতা নিজেই, আমরা গড়ব ‘জনতার বাংলাদেশ’।"
তিনি আরো বলেন, “বর্তমান আওয়ামী লীগের আমলে যারা সুবিধা নিয়েছেন, যারা লেখক ও মিডিয়া খুলেছেন, তাদের দিকে নজর রাখতে হবে। আমরা এনসিপি হিসেবে স্পষ্ট ঘোষণা করছি, আমরা কোনো চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট দল নই। আওয়ামী লীগের অবৈধ কর্মকাণ্ড শেষ, তাদের চ্যাপ্টার ক্লোজ করে আমরা নতুন পথ চলেছি।”
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে বিএনপির বিরোধিতার অপপ্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভুল। আমরা দেশে অবৈধ চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট চলতে দেবো না।” তিনি বলেন, “বিশেষত সিলেটের চা বাগানের শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে, তাঁদের মজুরি ঠিকমতো দেওয়া হয় না। এনসিপি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও তাদের ভাগ নিশ্চিত করবে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা সেলিম।
সমাবেশ পরিচালনা করেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও সিলেট জেলা প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন শাহান।
এই পদযাত্রা ও সমাবেশের মাধ্যমে এনসিপি জনসাধারণের কাছে তাদের নতুন কর্মসূচি ও লক্ষ্য নিয়ে আসছে, যেখানে মূল ফোকাস থাকবে দারিদ্র্য ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর লড়াই, এবং দেশের ক্ষমতা পুরোপুরি জনতার হাতে তুলে দেওয়া।
এনসিপির নেতারা মনে করেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সুবাদে দেশের সম্পদ ও ক্ষমতা একদলীয় নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে, যা সাধারণ মানুষের উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। তাই তারা জনগণের সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
পরিবর্তনের এই লক্ষ্যে এনসিপি তাদের সংগঠনকে আরও মজবুত করে দেশের প্রতিটি জেলায় কার্যক্রম শুরু করতে পরিকল্পনা করছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিশাল সাফল্য অর্জন করার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছে।