জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাহবুব কামাল টক শোতে বলেছেন, নৌকা মার্কা পেলে এনসিপি সহজেই জিতবে, তবে পরে বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দেবে।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাহবুব কামাল সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “এনসিপি যদি নৌকা মার্কা নিয়ে আসন্ন নির্বাচন করে, তাহলে তাদের জয় নিশ্চিত। তবে জয়ের পর তারা বঙ্গবন্ধুকে ছুড়ে ফেলে দেবে।” তাঁর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
মাহবুব কামাল বলেন, “আমাদের দেশে এখন এত ফিলোসফার বা দার্শনিক তৈরি হয়েছে যে কথা বলা কঠিন হয়ে গেছে। সবাই এমনভাবে তত্ত্ব দিচ্ছে, যেন আমরা কিছুই জানি না বা বুঝি না।” নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, “অফিসের নিচের চায়ের দোকানে আলাপের সময় আমি বলেছিলাম— আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেছে, নৌকা মার্কাও আর তাদের নেই। এই সুযোগে এনসিপি যদি নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে, তাহলে গ্রামের অসংখ্য মানুষ, যারা নৌকাকে বঙ্গবন্ধুর দল হিসেবে চেনে, তারা ভোট দেবে। এতে এনসিপি জয়লাভ করবে, এরপর তারা চাইলে বঙ্গবন্ধুকে ছুড়ে ফেলতেও পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনি যদি কোনো অশীতিপর বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাকে গিয়ে প্রশ্ন করেন, তিনি বলবেন— আমি ১৯৫৪ সাল থেকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আসছি। গ্রামের এই সাধারণ মানুষরা রাজনীতির জটিলতা বোঝেন না। তারা প্রতীক দেখে ভোট দেন, প্রতীকের পেছনের রাজনীতি বোঝার সুযোগ বা আগ্রহ তাদের নেই।”
মাহবুব কামাল বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি সংবেদনশীল দিকও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এখন একটা অবাস্তব ধারণা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে যে মুক্তিযুদ্ধ থাকবে না, মুক্তিযুদ্ধের কোনো চিহ্ন থাকবে না। এটা কি আদৌ বাস্তবায়নযোগ্য? মানুষের জীবন কিছু স্মৃতির সমষ্টি। আমি ৭০-৭১ বছরে যা করেছি, যা করিনি— সবই আমার স্মৃতির অংশ। স্মৃতি ছাড়া মানুষ মানে মৃত বা জড় পদার্থ। আর মুক্তিযুদ্ধ তো আমাদের জাতীয় স্মৃতির অংশ, আপনারা সেটি মুছে ফেলতে চাইছেন।”
তাঁর এই বক্তব্য অনেকে সমর্থন করলেও, রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে সমালোচনাও চলছে। অনেকে বলছেন, মাহবুব কামালের এই মন্তব্য এনসিপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নতুন কৌশল ভাবতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, আবার কেউ কেউ মনে করছেন এটি গ্রামীণ ভোটারদের নিয়ে অযথা সাধারণীকরণ। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, তাঁর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং আগামী নির্বাচনের প্রতীক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।