close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

এনবিআরের সংস্কার না হলে রাজস্ব ঘাটতি চলতেই থাকবে ,সিপিডি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হলে রাজস্ব ঘাটতি চলতেই থাকবে, বাজেটেও পুনর্বণ্টনের দৃষ্টিভঙ্গি অপ্রতুল—সিপিডির তীব্র আলোচনা।..

রাজধানীর গুলশানে রবিবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আয়োজিত ডায়ালগে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হলে দেশের রাজস্ব ঘাটতি নিরন্তর চলতেই থাকবে। নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এনবিআর প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনা, কারণ সেখানে কোনো কাঠামোগত বা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার হয়নি। সংস্কার ছাড়া ঘাটতি চলতেই থাকবে।’

সিপিডির প্রধান বৈঠকে ড. ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, বিজিএমইএ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনামুল হক খান, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা এবং শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন।

মোস্তাফিজুর রহমান সূচনা বক্তব্যে বলেন, বাজেট ঘোষণার পর জনগণ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মতামত যথেষ্ট সময়ের অভাবে নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রত্যক্ষ কর বেশি এবং পরোক্ষ কর কম, কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো পরোক্ষ কর বেশি, যা মূলত সাধারণ জনগণের ওপর পড়ে। আমাদের রাজস্ব আয়ের দুই তৃতীয়াংশ আসে পরোক্ষ কর থেকে এবং এক তৃতীয়াংশ আসে প্রত্যক্ষ কর থেকে।

তিনি বাজেটের পুনর্বণ্টন দর্শন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘যাদের আয় বেশি, তাদের থেকে বেশি কর আদায় করা হয় এবং সেই করের অর্থ অবহেলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় হয়। কিন্তু এবারের বাজেটে সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসেনি।’

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘কর সংগ্রহে কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া রাজস্ব ঘাটতি কমানো সম্ভব নয়। সরকারের উচিত এনবিআরের কাঠামোতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার আনা এবং কর ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।’ তিনি জানান, ‘বাজেটে আমরা কিছু আশা করেছিলাম যে বাজেট দুষ্টচক্র থেকে বের হতে সাহায্য করবে, কিন্তু সেটি হয়নি।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা কর আদায়ে স্বচ্ছতা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা কমানোর কথা গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেন। তারা মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলার জন্য এনবিআরের পুনর্গঠন ও প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দেওয়া দরকার।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন জরুরি। কর ব্যবস্থায় সংস্কার না হলে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কঠিন হবে এবং অর্থনৈতিক ঘাটতি কমানো যাবে না।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হলে দেশে রাজস্ব ঘাটতি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হিসেবে থেকে যাবে। সিপিডির আলোচনায় উঠে এসেছে কর ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস ও বাজেটের পুনর্বণ্টনের গুরুত্ব, যা দেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করতে বাধ্যতামূলক। সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার ও কর নীতির পরিবর্তন আনতে হবে, না হলে ঘাটতি কমানো কঠিন হবে।

Ingen kommentarer fundet