close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাই সেবা গ্রহণকারী পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য ফাঁস করেছে বলে প্রমাণ পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সরকারি ও বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) জারি করা হয়েছে।
কী ঘটেছে?
সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এই তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ। তিনি জানান, ‘এনআইডি সেবা গ্রহণকারী পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য ফাঁস করেছে। প্রাথমিক তদন্তে এর সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।’
যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে:
✔ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
✔ ইউসিবি ব্যাংকের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘উপায়’
✔ চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি
✔ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর
✔ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইবাস
তদন্তের অগ্রগতি ও শাস্তির সম্ভাবনা
সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অসতর্কতা নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য ফাঁস করা হয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। যদি কেউ স্বপ্রণোদিতভাবে এটি করে থাকে, তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।’
বর্তমানে এনআইডি অনুবিভাগ থেকে ১৮২টি প্রতিষ্ঠান এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণ করছে। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের পাওয়া সেবা অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করছে, যা মূল চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করছে।
এই ঘটনায় জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন?
২০২৩ সালের ৬ জুলাই একটি মার্কিন ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য ইন্টারনেটে উন্মুক্ত রয়েছে। তবে, সেই সময় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ নিশ্চিত করেছিল যে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি সার্ভার সম্পূর্ণ নিরাপদ।
কিন্তু সাম্প্রতিক এই তথ্য ফাঁসের ঘটনায় নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনআইডি সংক্রান্ত তথ্যের অপব্যবহার হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা চরমভাবে লঙ্ঘিত হতে পারে, এমনকি প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা কঠোরভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং তথ্য ফাঁসের ঘটনায় জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে ইসি।
এনআইডি তথ্য ফাঁসের মতো স্পর্শকাতর ঘটনাগুলোর সঠিক তদন্ত এবং কঠোর শাস্তি না হলে, সাধারণ নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
No comments found