লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বার্তা দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিএনপি সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে শতভাগ একমত না হলেও, দেশের গণতান্ত্রিক ধারা টিকিয়ে রাখতে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে অনেক ছাড় দিয়েছে।
বুধবার (তারিখ দিন) পটুয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, “গণতন্ত্রকে সামনে এগিয়ে নিতে চাইলে আপস ও বাস্তবতা দুটোই বিবেচনায় আনতে হয়। আমরা সেটাই করছি।
তিনি আরও বলেন, “ছোট দলের মতামত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে সমস্যার সমাধান বড় দল হিসেবে বিএনপিকেই করতে হবে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আমাদের কাছে জনগণের অনেক আশা—আমরাও সেই প্রত্যাশার মর্যাদা দিতে চাই।
তারেক রহমান স্বীকার করেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় কিছু বিষয় নিয়ে দ্বিমত থাকলেও, গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়তে বিএনপি অনেক সময়েই বড় সিদ্ধান্তে ছাড় দিয়েছে।
সব কিছুর সঙ্গে আমরা একমত না হলেও, আমরা চাই গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হোক। জনগণ যেন তাদের অধিকার ফিরে পায়, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
তার বক্তব্যে ছিল স্পষ্ট হুঁশিয়ারি ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা। দলের ভেতরে কোনোভাবেই শৃঙ্খলা ভাঙন সহ্য করা হবে না বলেও তিনি সাফ জানিয়ে দেন। "দলের ভাবমূর্তি যারা নষ্ট করছে, তাদের কোনো ছাড় নেই। যারা জনগণের সঙ্গে থাকবে না, তাদের দলে জায়গা নেই,”—বলে হুঁশিয়ার করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান এও মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের পতনের মূল কারণ তাদের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করা।
“মানুষের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে, জনগণ তাদের ক্ষমা করে না। আজ আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থা হারিয়েছে। তাই মানুষের কাছে বিএনপিই এখন একমাত্র আশা
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আমরা চাচ্ছি সবাই মিলে একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করি যেখানে জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হবে। দলমত নির্বিশেষে সকল পক্ষকে এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আসতে হবে।
এ বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি যে আগামীর নির্বাচনে শক্ত অবস্থান নিচ্ছে, তা স্পষ্ট। একইসঙ্গে জাতীয় ঐক্যের বার্তাও পৌঁছে দিলেন তারেক রহমান, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন গতি আনতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
তারেক রহমানের বক্তব্যে যেমন ছিল আপসের বার্তা, তেমনি ছিল কঠোর রাজনৈতিক বাস্তবতাও। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি ছাড় দেওয়ার কথা বললেও, দলের শৃঙ্খলা ও ভবিষ্যতের জন্য একটি কঠিন বার্তাও দিয়েছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, বিএনপি আগামী দিনে দেশের রাজনীতিতে আবারও কেন্দ্রে অবস্থান নিতে প্রস্তুত।