close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

এভিন কারাগারে ইসরায়েলের হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা ৭১, ইরান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
তেহরানের এভিন কারাগারে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭১ জন। নিহতদের মধ্যে বন্দী, দর্শনার্থী, কর্মচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাও রয়েছেন। ফরাসি নাগরিকরাও ঝুঁকিতে।..

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে এবার এক ভয়ঙ্কর মোড় নিল পরিস্থিতি। তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে ইসরায়েলের সরাসরি হামলা চালিয়ে অন্তত ৭১ জনকে হত্যা করার খবর জানিয়েছে ইরানি বিচার বিভাগ। নিহতদের মধ্যে ছিলেন শুধু বন্দী নয়, কারাগার স্টাফ, দর্শনার্থী এবং আশেপাশে থাকা সাধারণ বাসিন্দারাও।

গত ২৩ জুন (রোববার), ইরানের রাজধানী তেহরানে এই হামলা চালানো হয়। ইরানি বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, এ হামলায় হতাহতদের মধ্যে রাজনৈতিক বন্দী থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্মচারী, সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবক এবং বন্দীদের আত্মীয়-স্বজন পর্যন্ত কেউই রেহাই পাননি।

তিনি বলেন, “এ হামলায় আমাদের একটি বৃহৎ কারাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে এবং হতাহতদের অধিকাংশই ছিলেন ভেতরের কর্মী ও সাধারণ দর্শনার্থী।”
ইরানের বিচার বিভাগের সংবাদমাধ্যম মিজান–এ প্রকাশিত তথ্যমতে, আহতদের আশেপাশের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং বেঁচে থাকা বন্দীদের তেহরান প্রদেশের অন্য কারাগারে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলের এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল নিছক প্রতিশোধ নয়, বরং এটি ছিল একটি কৌশলগত বার্তা। শুধু পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র কিংবা সামরিক ঘাঁটি নয়, ইসরায়েল ইরানের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রতীকগুলোকেও নিশানায় রাখতে চায়—এটাই তাদের উদ্দেশ্য।

এভিন কারাগার দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এখানে বহু রাজনৈতিক বন্দী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং বিদেশি নাগরিক আটক ছিলেন বা আছেন। এ কারণে ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

হামলার ঘটনায় ফ্রান্স বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বাহো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (Twitter)-এ দেওয়া পোস্টে বলেন,
“তেহরানের এভিন কারাগারে হামলার ঘটনায় আমাদের নাগরিক সেসিল কোহলাজ্যাকস প্যারিস গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। এ ধরনের হামলা আমরা মেনে নিতে পারি না।”

এই ঘটনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো নতুন করে উদ্বেগে পড়েছে।
ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে, যাতে কারাগারে আটক ফরাসি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ হামলা ইরান-ইসরায়েল সংঘাতকে আরও ভয়াবহ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে, যদি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে ইরান নতুন হামলার পথে এগোয়, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধের মুখোমুখি হবে।

ইসরায়েলের এই সরাসরি হামলা শুধু একটি কারাগারেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; এটি এক নতুন রাজনৈতিক বার্তা, সামরিক কৌশল এবং বৈশ্বিক সন্ত্রাসের ইঙ্গিতবাহী ঘটনা।
এভিন কারাগারে হামলার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট— এই লড়াই শুধু অস্ত্র আর রণক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটা আদর্শ, প্রতীক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত।

এই ঘটনায় নিহতদের জন্য শোক ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পাশাপাশি, সামনে আরও অশান্ত সময় অপেক্ষা করছে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Nessun commento trovato


News Card Generator