টিকটক তারকা লায়লা আখতার ও মেহেদী শুভর বিয়ের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই নেটদুনিয়ায় তোলপাড়। তবে এটি ছিল কেবল ব্রাইডাল ফটোশুট, আসল সত্য জানলে চমকে যাবেন আপনিও।
দেশের আলোচিত নারী টিকটকার লায়লা আখতারকে ঘিরে আবারও সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। সম্প্রতি ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি বধুবেশে রয়েছেন এবং তার পাশে বর বেশে দাঁড়িয়ে আছেন মেহেদী শুভ। ভিডিওতে দুজনকে হাসিমুখে কথা বলতে এবং একে অপরকে খাওয়াতে দেখা যায়। এতেই শুরু হয় গুঞ্জন—তাহলে কি সত্যিই বিয়ে করে ফেললেন লায়লা ও মেহেদী?
প্রথম দেখায় ভিডিও দেখে অনেকেই ধরে নেন, এটি তাদের আসল বিয়ের অনুষ্ঠান। কারণ, বিয়ের সাজ, পরিবেশ এবং তাদের কথোপকথন—সবকিছুই বিয়ের আবহ তৈরি করেছিল। তবে তদন্তে বের হয়ে আসে ভিন্ন বাস্তবতা। আসলে এটি ছিল একটি ব্রাইডাল ফটোশুট, যেখানে মেহেদী শুভ বর এবং লায়লা আখতার কনে সাজে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি তৈরি হয় এবং নেটিজেনরা ভেবেছিলেন, তাদের গোপন বিয়ে হয়ে গেছে।
মেহেদী শুভ নিজেও একজন পরিচিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তিনি ‘মেহেদী শুভ ভাইয়া’ নামে টিকটক ও ফেসবুকে পরিচিত। তার সঙ্গে লায়লা একাধিক কনটেন্টে আগে থেকেই কাজ করছেন। আলোচিত এই ব্রাইডাল শুটও ছিল সেই ধারাবাহিকতার অংশ।
তবে বিয়ের ভিডিও নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লেও নেটিজেনদের মধ্যে আরেকটি প্রশ্ন তোলপাড় করছে—তারা কি সত্যিই প্রেমের সম্পর্কে জড়িত? ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, লায়লা ও শুভ একে অপরের প্রতি বিশেষ টান অনুভব করেন এবং সম্পর্কেও রয়েছেন। যদিও তারা বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি, তবে তাদের একসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে উপস্থিতি এবং কনটেন্টে অংশ নেওয়া দেখে অনেকেই বিষয়টি বিশ্বাস করছেন।
এর আগে লায়লা আখতার ছিলেন আরেক টিকটক তারকা প্রিন্স মামুনের সঙ্গে দীর্ঘ আড়াই বছরের সম্পর্কে। সেই সম্পর্কের শুরুটা যতটা আলোচিত ছিল, শেষটা হয়েছিল ততটাই নাটকীয়। তাদের মধ্যে পারস্পরিক অভিযোগ, মামলাবাজি এবং আদালতের দ্বারস্থ হওয়া—সবকিছুই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
২০২৩ সালের জুন মাসে লায়লা মামুনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে মামলা করেন। অভিযোগ ছিল ‘ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা’র মতো ভয়াবহ অপরাধে। মামলার পরদিন কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার হন মামুন। পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হলেও আইনি প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি। ২০২৪ সালে লায়লা আবারও মামুনের বিরুদ্ধে জিডি করেন ক্যান্টনমেন্ট থানায়। পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ডিজির কপি থেকে জানা যায়, মামুন একাধিকবার লায়লাকে হুমকি দিয়েছেন তার দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। এমনকি মারধর ও প্রাণনাশের ভয় দেখানোর অভিযোগও রয়েছে। এসব ঘটনায় মামুনকে একাধিকবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং আদালতে হাজির করেছে। বর্তমানে মামুন জামিনে থাকলেও লায়লার আইনি লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
এই জটিল অতীতের পর লায়লার নতুন করে মেহেদী শুভর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অনেককেই অবাক করেছে। কেউ কেউ বলছেন, লায়লা এবার হয়তো নতুন করে জীবন শুরু করতে চাইছেন। তবে বিয়ের গুঞ্জনের বিষয়টি এখনো কেবল ভুল বোঝাবুঝি। আপাতত তারা কেবল ব্রাইডাল ফটোশুট করেছেন, এর বাইরে কোনো আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়নি।
তবুও সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ মনে করছে, ধোঁয়ায় আগুন আছে বলেই গুজব ছড়িয়েছে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে সত্যিকারের বিয়েতে রূপ নিতে পারে লায়লা-শুভর এই সম্পর্ক। এখন দেখার বিষয়, নেটদুনিয়ার আলোচিত এই জুটি সত্যিই একসঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু করেন কিনা।