close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

দুপুরের মধ্যেই আ. লীগকে নিষিদ্ধের দাবি ড. শফিকুল ইসলামের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যমুনার সামনে ছাত্র-জনতার ঢল, উত্তাল ঢাকা। ড. শফিকুল ইসলাম দাবী জানালেন, শুক্রবার দুপুরের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে! তুলে ধরলেন গণহত্যার অভিযোগ, হুঁশিয়ারি দিলেন—এই আন্দোলন থামবে না।..

উত্তাল রাজধানীতে জামায়াতের হুঁশিয়ারি, ‘দুপুর পার হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই’

রাজধানীর রাজনৈতিক উত্তাপ এক নতুন মাত্রা পেল। শুক্রবার (৯ মে) সকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ সরকারের প্রতি কঠোর ভাষায় আহ্বান জানিয়ে বললেন, “আজ আমরা দুপুর পার করতে চাই না। এর আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”

তিনি এই কথা বলেন ছাত্র-জনতার একটি জোরালো অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে, যা আয়োজন করা হয় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে।

তিনি আরও বলেন,

 

আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে সবাইকে আহ্বান জানাই—একটি গণতন্ত্রবিরোধী, রক্তে হাত রাঙানো দলকে নিষিদ্ধ করতে একতাবদ্ধ হোন। আওয়ামী লীগ অতীতে গণহত্যা চালিয়েছে, গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে।”

ড. শফিকুল আরও জানান, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা ও নাগরিকদের সালাম জানিয়েছেন এবং আশাবাদ প্রকাশ করেছেন, সরকার এই “ন্যায়সংগত দাবি” মেনে নিয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে।


গণহত্যার অভিযোগ তুলে ধরলেন জামায়াত নেতা

ড. শফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অতীতে সংঘটিত একাধিক ঘটনায় গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। তার কথায়:

  • ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর, রাজনৈতিক সহিংসতায় বহু মানুষ নিহত হন।

  • ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে।

  • ২০১৩ সালের ৫-৬ মে, হেফাজতের বিরুদ্ধে রাতভর অভিযান চলে, শতাধিক নিহতের দাবি।

  • ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরকালে, বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে নিহত করা হয় বহু মানুষকে।

তিনি বলেন,

এগুলো শুধুই তারিখ নয়, প্রতিটা তারিখ আমাদের রক্তঝরা ইতিহাস। আওয়ামী লীগ বারবার দেশের জনগণের উপর রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করেছে। আজ তাই জনগণই বলছে—এই দলকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।”


অবিরাম আন্দোলনের ঘোষণা, “৫ আগস্টে পতন, এবার নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফেরা নয়”

ড. শফিকুল মনে করিয়ে দেন,

 

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকেই জনতার মুখে মুখে একটাই দাবি—এই দানবীয় দলকে নিষিদ্ধ করো। আজ সেই দাবির পক্ষে দেশের প্রতিটি প্রান্তে মানুষ রাস্তায়।”

তিনি অভিযোগ করেন, গণতান্ত্রিক এই আন্দোলনকে থামাতে নানা দমনপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। কিন্তু ছাত্র-জনতা এখন আর পিছু হটবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।


সমাবেশে আরও কারা ছিলেন?

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের প্রতি দাবি জানান—অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করো।

তাদের মতে, রাজনৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে, যারা অতীতে বারবার সহিংসতা ও দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে, তাদের আর জায়গা থাকতে পারে না।


দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে জামায়াত ও ছাত্র-জনতা

ড. শফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যের শেষাংশে বলেন,

 

যারা ৫ আগস্টে ইতিহাসের গতিপথ পাল্টেছে, তারাই আজ মাঠে নেমেছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।”

রাজনীতি সচেতন মহল মনে করছেন, দেশের রাজনীতিতে এক নতুন উত্তাপ শুরু হলো এই দাবিকে কেন্দ্র করে। এখন দেখার বিষয়—সরকার কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা কোথায় গিয়ে ঠেকে।

Nema komentara