দুই বছর পর আবার জাহাজ রপ্তানিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে জাহাজ রপ্তানির ইতিহাসে আবারও সুবাতাস বইছে। প্রায় দুই বছর বিরতির পর দেশের চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড আগামী জানুয়ারির প্রথম
বাংলাদেশে জাহাজ রপ্তানির ইতিহাসে আবারও সুবাতাস বইছে। প্রায় দুই বছর বিরতির পর দেশের চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি জাহাজ রপ্তানি করতে যাচ্ছে। ‘রায়ান’ নামের ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজটি রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি আবারও এই শিল্পে আলোচনায় ফিরছে। ওয়েস্টার্ন মেরিন জানায়, তারা একই ক্রেতার কাছে আরও সাতটি জাহাজ রপ্তানির পরিকল্পনা করছে। ২০২০ সালের পর এবারই প্রথম বড় পরিসরে রপ্তানি কার্যক্রমে ফিরছে প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুসারে, ওয়েস্টার্ন মেরিন সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দুটি জাহাজ ভারতে রপ্তানি করেছিল, যার মূল্য ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ডলার। পাঁচ বছর বিরতির পর প্রতিষ্ঠানটি এবার আন্তর্জাতিক বাজারে জাহাজ রপ্তানির কার্যক্রম আবার শুরু করছে। বিশ্ব মন্দা কাটিয়ে সম্ভাবনার পথে ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, “দীর্ঘদিনের মন্দা কাটিয়ে জাহাজ রপ্তানিতে বাংলাদেশ আবার ফিরে আসছে। বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ খাতে চাহিদা বাড়ায় নতুন কার্যাদেশ আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।” ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকার আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড স্লিপওয়েজ ডেনমার্কে জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের জাহাজ রপ্তানির যাত্রা শুরু করে। এরপর ২০১০ সালে চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড জার্মানিতে জাহাজ রপ্তানি করে এই খাতকে এগিয়ে নেয়। তবে ২০১১ সালে বৈশ্বিক মন্দার কারণে এই খাত বড় ধাক্কা খায়। মন্দার সময়ের ধাক্কা ও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প মন্দার সময় অনেক বিদেশি ক্রেতা জাহাজের আদেশ বাতিল করে, যা এই খাতের উদ্যোক্তাদের বিপদে ফেলে। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সংকট আরও গভীর হয়। আনন্দ শিপইয়ার্ডের ক্ষেত্রে, ১০টি জাহাজের নির্মাণকাজ বাতিল হয়। তবে এখন প্রতিষ্ঠানটি তাদের নির্মাণাধীন জাহাজগুলো শেষ করে রপ্তানির উদ্যোগ নিচ্ছে। আনন্দ শিপইয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক তারিকুল ইসলাম জানান, “দুই সপ্তাহ আগে তুরস্কের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আমাদের ইয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে নির্মাণাধীন জাহাজগুলো রপ্তানি সম্ভব হবে।” উল্লেখযোগ্য সাফল্য ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ মোট ৪৫টি জাহাজ ও জলযান রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে ১৯টি সমুদ্রগামী জাহাজ। এসব রপ্তানি থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে। বাংলাদেশে জাহাজ রপ্তানি খাতের এই নতুন অধ্যায় দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে এই খাত আরও বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
Không có bình luận nào được tìm thấy