close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

দ্রুত মা'ম'লা নিষ্পত্তি ও মানবাধিকার নিশ্চিতসহ ৩ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি: আইন উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, মানবাধিকার রক্ষা এবং মামলার খরচ কমিয়ে জনগণকে আইনের ভয় থেকে মুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় তিনটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানালেন, এই রূপান্তরের ফলে দেশের মাম..

দেশে আইনের জটিলতা, মামলা চলার দীর্ঘসূত্রতা ও উচ্চ খরচে ন্যায়ের মুখ দেখা যেন সাধারণ মানুষের জন্য এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এই বাস্তবতা বদলে দিতে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে আইন মন্ত্রণালয়। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য সামনে রেখে মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে — দ্রুত ও কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং জনগণকে ‘মামলার অভিশাপ’ থেকে মুক্ত করা।

শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, "আমরা এখনো এমন একটি বাস্তবতায় বাস করি, যেখানে বিচার চাওয়া মানেই হয়রানি, ব্যয় ও অপেক্ষার প্রতীক। এই চিত্র বদলাতে হলে আইনের মৌলিক কাঠামোতে সংস্কার আনতেই হবে। তাই আমরা সিপিসি (সিভিল প্রসিডিউর কোড) ও সিআরপিসি (ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড) অধ্যাদেশের সংস্কারের দিকে অগ্রসর হয়েছি।"

এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো, মামলার জট হ্রাস করে বিচার ব্যবস্থাকে গতিশীল ও জনবান্ধব করা।

তিনি আরও বলেন, "প্রতিবছর দেশে প্রায় ৫ লাখ নতুন মামলা দায়ের হয়। অথচ লিগ্যাল এইড (আইনগত সহায়তা প্রকল্প) থেকে নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৩৫ হাজার। এই সংখ্যা যেন ২ লাখ ছাড়িয়ে যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। যদি আমরা সেটা অর্জন করতে পারি, তাহলে মামলার সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে, যা হবে বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন।"

আলোচনায় আরও একটি বড় ঘোষণা দেন ড. নজরুল। তিনি বলেন, "লিগ্যাল এইড-এর আওতায় চলমান মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য একজন বিচারকের স্থানে তিনজন বিচারক নিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।"

এই ব্যবস্থা চালু হলে, প্রতি অঞ্চলে মামলা নিষ্পত্তির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মামলার জট হ্রাসের পাশাপাশি, আইনি প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয় — এ দিকটিও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
ড. নজরুল বলেন, "আইন শুধু অপরাধ দমন নয়, মানুষকে মর্যাদা দেওয়ার একটি হাতিয়ার। আমরা চাই, বিচারপ্রার্থী কেউ যেন হেনস্তার শিকার না হন।"

এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ সংশোধন করে একটি অধিকতর কার্যকর অধ্যাদেশ আনা হয়েছে। আলোচনা সভায় বিভিন্ন অংশীজন, বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার কর্মী ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

তাদের মতামত ও পরামর্শ অনুযায়ী এই অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানানো হয়।

আইন মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ শুধু কাগজে-কলমে সংস্কারের ঘোষণা নয় — বরং এক বাস্তবধর্মী, জনবান্ধব পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদি এই তিনটি লক্ষ্য বাস্তবে পরিণত করা যায়, তাহলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ এক যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করবে।

Inga kommentarer hittades