চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং, লালদিয়া ও বে টার্মিনাল ডিসেম্বরের মধ্যেই বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাবে বলে জানিয়েছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই বন্দরটির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
রোববার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি বন্দরের ৪ নম্বর ফটকে নতুন এজেন্ট ডেস্ক উদ্বোধন করেন এবং পরে সিপিআর ফটকে ‘ভেহিকল ও কনটেইনার ডিজিটাল ডাটা এক্সচেঞ্জ সিস্টেম’-এর উদ্বোধন করেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, আন্তর্জাতিক টেন্ডারের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়া টার্মিনাল এবং বে টার্মিনাল প্রথম বিদেশি অপারেটরের কাছে হস্তান্তর করা হবে। “৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা টার্মিনালগুলো প্রথম অপারেটরের কাছে হস্তান্তর করব,” বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরকে বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে শীর্ষে রাখতে হলে বিশ্বের সেরা অপারেটরদের আনতে হবে। বর্তমানে বন্দরে বিভিন্ন সংস্কার ও আধুনিকায়ন কার্যক্রম চলছে। তবে দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। সেরা আন্তর্জাতিক অপারেটররা দায়িত্ব নিলে এ সমস্যাগুলোও অনেকাংশে কমে আসবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে আশিক মাহমুদ বলেন, “আমরা চাই ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের বন্দরের সক্ষমতা চার থেকে পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পাক। এ লক্ষ্যে চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। বড় বন্দরের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে চাই।”
তিনি বিদেশি অপারেটর নিয়োগের পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে পূর্বে নিয়োগ পাওয়া বিদেশি অপারেটর রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি)-এর অভিজ্ঞতা মোটেও ইতিবাচক ছিল না। তারা এখানে এসে বিভিন্ন জটিলতার মুখে পড়েছে, যা তাদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতাকে খারাপ করেছে।”
আশিক মাহমুদ স্বীকার করেন, “বাংলাদেশ সরকার আগে কখনো আন্তর্জাতিক অপারেটরের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি বা কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেনি। এ কারণেই শুরুতে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে এবার আমরা আরও প্রস্তুত হয়ে এগোচ্ছি, যাতে ভবিষ্যতে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হয়।”
সরকারি ও বেসরকারি সংশ্লিষ্টদের মতে, বিদেশি অপারেটর আসার ফলে বন্দর পরিচালনায় গতি ও দক্ষতা বাড়বে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।