দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দল ও বিভেদ ভুলে অবশেষে এক অভূতপূর্ব ঐক্যের মঞ্চে সমবেত হয়েছে বরিশাল মহানগর ও জেলা বিএনপি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক 'ধানের শীষ'-কে বিজয়ী করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের অশ্বিনী কুমার হলে এক মতবিনিময় সভার মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক ঐক্যযাত্রা শুরু হলো। এই সভায় মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড এবং জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ একত্রিত হন।
বরিশাল বিভাগের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ সদর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নাম এসেছে দলের একজন হেভিওয়েট ও পরীক্ষিত নেতা মুজিবুর রহমান সরোয়ার-এর। তিনি পূর্বে পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, সাবেক সিটি মেয়র এবং প্রায় ২০ বছর ধরে বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কিছুটা উপেক্ষিত থাকার পর এবার তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত আসনটিতে সরোয়ার ছাড়াও আরও পাঁচজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সেই পাঁচজন প্রার্থীসহ সবাই এবার জোট বেঁধেছেন। দৃশ্যত সমস্ত কোন্দল ভুলে তারা সদর আসনের এক মঞ্চে উঠে এসে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করার লক্ষ্য স্থির করেছেন।
সভায় অংশগ্রহণকারী নেতারা দলীয় ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, দলের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে মুজিবুর রহমান সরোয়ার একজন পরীক্ষিত নেতা। দলীয় হাইকমান্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে তারা পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
নেতারা বলেন, "আদর্শ সংগঠন এই সংগঠনে প্রতিযোগিতা থাকতে পারে কিন্তু এই সংগঠনে কোনো প্রতিহিংসা নাই।" দীর্ঘ বছর পরে জেলা ও মহানগর বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা একত্রিত হওয়ায় তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং এই মিলনকে 'উৎসব উৎসবক পরিবেশে' [উৎসবমুখর] বলে বর্ণনা করেন।
তারা দৃঢ়তার সাথে অঙ্গীকার করেন যে, "আমরা ব্যক্তিরা রাজনীতি করি, ব্যক্তির ভিতরে ভেদাভেদ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি করি, বিএনপির মাকড়া ধানের শীষ, ধানের শীষের ব্যাপারে আমাদের কোনো নেতাকর্মীদের আপোষ নাই।" এই ঐক্যের বার্তা সমস্ত বরিশাল বিভাগকে একত্রিত করার একটি সুন্দর বার্তা হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে মনে করেন নেতারা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতদের ক্ষোভ এবং সংঘাতের খবর [যেমন জয়পুরহাট-২ আসনে সংঘর্ষ] দেখা গেলেও, বরিশাল-৫ আসনে এর সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা গেল। বরিশাল জেলা ও মহানগরের নেতারা অঙ্গীকার করেন যে, তারা সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠে থাকবেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করে বলেন, "সবার আগে দল, তারপর সবার উপরে দেশ। আমরা মনে করি দলীয় যে সিদ্ধান্ত হবে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।" ছাত্রদল থেকে যুবদল এবং যুবদল থেকে বিএনপিতে আসা নেতারা তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করে বলেন, তিনি যাঁকে মনোনীত করেছেন, তাঁরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। বিভেদ নয়, ঐক্যবদ্ধ বিএনপি মানুষের কল্যাণে কাজ করবে এবং আগামীর বাংলাদেশ নতুন করে গড়ার অঙ্গীকার করেন বরিশাল সদর আসরের বিএনপির প্রার্থী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।



















