close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ঢোল বাজিয়ে সংঘর্ষের মহড়া দিল ৪ গ্রামের মানুষ!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
In Faridpur’s Bhanga, hundreds from four villages armed with local weapons prepared for a clash over a football game. Swift police action prevented a major conflict.

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে চার গ্রামের শতাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। পুলিশের তৎপরতায় বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়ানো যায়।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা একসময় চারটি গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের প্রস্তুতিতে রূপ নেয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে আলগী ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচে বিদ্যানন্দি ও সুয়াদি গ্রামের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খেলার দ্বিতীয়ার্ধে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। সুয়াদি গ্রামের পক্ষে বিল্লাল মাতুব্বরের নেতৃত্বে কয়েকজন খেলোয়াড় বিদ্যানন্দি গ্রামের কয়েকজন ছেলেকে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় উভয় পক্ষের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়, যা মাঠে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।

পরদিন শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনার জের ধরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সুয়াদি গ্রামের কয়েকজন স্থানীয় সুখনি, বিদ্যানন্দি, নোয়াকান্দা ও আউড়াকান্দি গ্রামের কয়েকজন যুবককে মারধর করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এই চার গ্রামের শতাধিক মানুষ ঢোল বাজিয়ে ও মাইকে ঘোষণা দিয়ে একত্রিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েক’শ গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র—লাঠি, রামদা ও ধারালো অস্ত্র—নিয়ে বিদ্যানন্দি মাঠে জড়ো হয় এবং প্রকাশ্যে সংঘর্ষের মহড়া দেয়। এরপর তারা সুয়াদি গ্রামের উদ্দেশে অগ্রসর হতে শুরু করলে আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বলেন, ঢোলের শব্দ ও মাইকের ঘোষণা শোনামাত্রই অনেক পরিবার ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়, অনেকে শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।

পরিস্থিতির খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গ্রামবাসীরা থেমে যায়, তবে তখনো উত্তেজনা চরমে ছিল। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, “শুক্রবার দুপুরে সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত সেখানে যাই। দেখি, কয়েক গ্রামের মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা উভয় পক্ষকে আলাদা করে শান্ত করি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।” পুলিশ ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখছে এবং উভয় পক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে যেন কেউ উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা না করে।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, এই ধরণের গ্রামভিত্তিক সংঘর্ষ সামাজিক সম্প্রীতির জন্য বড় হুমকি। তারা প্রশাসনের পাশাপাশি গ্রাম্য নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন যেন কোনো খেলাধুলা বা সামান্য বিরোধের কারণে এ ধরনের সহিংস পরিবেশ আর সৃষ্টি না হয়।

ঘটনার পর এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে। তবে গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ এখনো পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি বলে জানা গেছে। প্রশাসন ও স্থানীয়রা আশা করছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে এবং ভবিষ্যতে কোনো সংঘর্ষ ছাড়াই খেলাধুলা উপভোগ করা যাবে।

לא נמצאו הערות