close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ধ্বংসস্তূপে জীবনের খোঁজ: গাজায় খালি হাতে মরদেহ উদ্ধারে বাঁচা-মরার লড়াই..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলি বোমা হামলায় ধসে পড়া গাজার শেজাইয়া পাড়ায় চলছে খালি হাতে উদ্ধার অভিযান। লাশের গন্ধ, বেঁচে থাকার আকুতি আর মৃত্যুভয়ের মধ্যেই প্রাণপণে চেষ্টা চালাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা ও সাধারণ মানুষ।..

গাজা শহরের শেজাইয়া পাড়া আজ যেন এক জীবন্ত কবরস্থান। বোমায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের নিচে চাপা পড়া মানুষদের বাঁচাতে যখন সময়ের সঙ্গে লড়াই চলছে, তখন সেখানকার বাতাসেও যেন ভেসে বেড়াচ্ছে মৃত্যু আর বাঁচার কান্না।

৯ এপ্রিল, বুধবার। দিনটা ছিল গাজার জন্য আরেকটি বিভীষিকাময় অধ্যায়ের নাম। ইসরায়েলি বাহিনী শেজাইয়া পাড়াসহ একাধিক আবাসিক এলাকায় চালায় ভয়াবহ বিমান হামলা। টার্গেট ছিল মূলত আবাসিক ভবনগুলো—যেখানে সাধারণ মানুষ বাস করতেন, শিশুরা খেলত, পরিবার বসবাস করত। মুহূর্তেই সব শেষ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় পুরো এলাকা।

হামলার পর কেটে গেছে দুই দিন। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ভেসে আসছে মৃতদেহের গন্ধ। চারদিক যেন স্তব্ধ। শুধু ভাঙা ইট-কাঠ-পাথরের ফাঁকে মাঝে মাঝে শোনা যায় চাপা কণ্ঠ—কারও কান্না, কারও আকুতি, কারও বাঁচার চেষ্টা।

এই হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে কেউ থেমে নেই। হাতে নেই কোনো আধুনিক যন্ত্র, নেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম—তবু খালি হাতেই ধসে পড়া ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ছেন আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন গাজার সাধারণ মানুষ। এক টুকরো কংক্রিট সরিয়ে হয়তো কেউ খুঁজে পাবেন তার সন্তানকে, স্ত্রীর মরদেহ, কিংবা কোনো আত্মীয়ের শেষ নিঃশ্বাস।

উদ্ধার কাজের মুহূর্তেই আকাশে ভেসে বেড়ায় ড্রোনের শব্দ, বোমার আশঙ্কা সর্বক্ষণ। তা সত্ত্বেও থেমে নেই উদ্ধার তৎপরতা। ভয়, কান্না আর ধ্বংসের মাঝেও মানবতার এই প্রতিচ্ছবি যেন নতুন ইতিহাস রচনা করছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা প্রকাশ করেছে সেই ভয়ঙ্কর বাস্তবতার কিছু চিত্র। আনাদোলু এজেন্সি এবং রয়টার্সের আলোকচিত্রীর তোলা এসব ছবি যেন সাক্ষ্য দিচ্ছে—এখানে শুধু যুদ্ধ নয়, এখানে চলছে এক বিশুদ্ধ মানবিক লড়াইও।

এই চিত্রপট শুধুমাত্র রাজনৈতিক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট নয়, এটি মানুষে মানুষে সহানুভূতির নিদর্শন। গাজায় যারা এখনও বেঁচে আছেন, তারা প্রতিটি মুহূর্ত লড়ছেন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। এবং যারা চাপা পড়েছেন, তাদের জন্য প্রতিটি ইট সরানো হচ্ছে ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধ নিয়ে।

এই ঘটনা আরেকবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—সাধারণ মানুষের ওপর যুদ্ধের প্রভাব কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে। যখন রাষ্ট্রের বোমা পড়ে নাগরিকদের ঘরে, তখন তার জবাব দিতে হয় খালি হাতে। কখনো কখনো শুধুমাত্র ভালোবাসা, মানবিকতা আর সাহস দিয়েই।

No se encontraron comentarios