close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ধামইরহাটে শিয়ালের কামড়ে আহত ১২, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই টিকা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ধামইরহাটে শিয়ালের কামড়ে ১২ জন আহত, গুরুতর ২ জন হাসপাতালে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্কের টিকাও নেই। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শিশু ও নারীসহ গ্রামবাসী।..

নওগাঁর ধামইরহাটে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়েছে একঝাঁক বন্য শিয়ালের হঠাৎ আক্রমণে। গত তিনদিনে উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অন্তত ১২ জনকে কামড়ে জখম করেছে শিয়াল। নারী-পুরুষ, শিশু—কাউকেই ছাড়ছে না এই বন্য প্রাণীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালে নেই জলাতঙ্কের প্রয়োজনীয় টিকা। ফলে আহতদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে।

বুধবার (২ জুলাই) সকালে আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ফিরোজ কবির গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন—“গত তিনদিনে একাধিক গ্রামে শিয়ালের হামলায় ১০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”

স্থানীয়রা জানান, শিয়ালগুলো সংঘবদ্ধভাবে ঘর-বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করে এবং সুযোগ বুঝে আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে। অনেক সময় একসাথে ২-৩টি শিয়াল বেরিয়ে এসে পথচারীদের কিংবা বসতবাড়ির আশেপাশে থাকা মানুষদের কামড়ে দেয়। আহতদের অধিকাংশই আলমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন:

  • রবিউল আলম সুইট

  • আবদুল লতিফ

  • রেজিনা আক্তার

  • মো. মেসবাউল

  • মাইমুনা বেগম

  • আনোয়ার হোসেন চৌধুরী

  • আবদুস সালাম

  • মো. আরিফ হোসেন

  • কালাম হোসেন

তাদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর অবস্থা ছিল গুরুতর। তিনি জানান, “মঙ্গলবার ভোরে বাড়ির পাশ দিয়ে হাঁটার সময় একটি শিয়াল এসে হাতে কামড়ে দেয়। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই, কিন্তু সেখানে জলাতঙ্কের টিকা না থাকায় জয়পুরহাট হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক টিকার সংকট এখন চরমে। আহতরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে উদ্বেগ ও আতঙ্কে ভুগছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জহুরুল ইসলাম বলেন,সরকারি বরাদ্দে আমরা তেমন করে জলাতঙ্কের টিকা পাই না। নিজস্ব উদ্যোগে বা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সামান্য পরিমাণে সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এখন যে হারে শিয়াল ও কুকুরের আক্রমণ বাড়ছে, তাতে এসব টিকা অপ্রতুল হয়ে পড়ছে।

গ্রামবাসীরা জানান, দিনের আলোতেও এখন আর স্বস্তি নেই। বিশেষ করে যেসব বাড়িতে ছোট শিশুরা আছে, তাদের বাইরে বের করাই এখন রীতিমতো বিপজ্জনক। আতঙ্কে অনেকে দিনভর ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকছেন।

একজন নারী বলেন,বাচ্চারা খেলতে বের হতে পারে না। এমনকি মাঠে কাজ করতেও ভয় লাগে। যে কোনও সময় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে শিয়ালগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তারা দাবি করছেন—

  • প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত জলাতঙ্কের টিকা মজুত রাখতে হবে

  • শিয়াল নিধনে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে

  • জনসচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে

তারা আরও বলেন, বিষয়টি এখন আর সামান্য কোনো প্রাণীর কামড় নয়—এটি হয়ে উঠেছে জনস্বাস্থ্য ও জননিরাপত্তার সংকট। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

ধামইরহাটের এই শিয়ালের কামড়ের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। টিকা সংকট ও চিকিৎসার অভাবে এলাকাবাসীর মধ্যে যে ভয়-আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত নিরসনের জন্য প্রয়োজন প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ।

No comments found


News Card Generator