close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ঢাকার ৪৮ থানায় দায়িত্ব পাচ্ছে অক্সিলারি ফোর্স: নতুন দিগন্তে পুলিশিং!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সম্প্রতি এক চমকপ্রদ ঘোষণা দিয়েছে যে, রাজধানী ঢাকার ৪৮টি থানায় 'অক্সিলারি ফোর্স' বা সহায়ক পুলিশ নিয়োগ করা হবে। এই নতুন উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো, শপিংমল ও আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তা..

গত শনিবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছেন যে, 'অক্সিলারি ফোর্স' পুলিশ কমিশনারের অধীনে পরিচালিত হবে এবং এর সদস্যরা পুলিশের মতো গ্রেপ্তারি ক্ষমতা ভোগ করবেন। এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি পরিচিত পুলিশিং কৌশল হলেও, বাংলাদেশে এ ধরনের সহায়ক পুলিশ নিয়োগের এই প্রথম নজির।

ডিএমপি কমিশনার জানান, "এই ফোর্সের সদস্যরা পুলিশের সহায়ক হিসেবে কাজ করবেন, তবে তাদের দায়িত্ব পুলিশ সদস্যদের মতোই হবে, তারা কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা রাখবেন।"

এটি নিয়ে নানা আলোচনা

যদিও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স-১৯৭৬ অনুযায়ী অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগের বিধান রয়েছে, তবে এই ফোর্সের সদস্যরা সত্যিই গ্রেপ্তারি ক্ষমতা বা তদন্ত ক্ষমতা পাবেন কি না, তা স্পষ্ট হয়নি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা এই নিয়োগের প্রতি সাধারণভাবে ইতিবাচক হলেও, গ্রেপ্তারি ক্ষমতার বিষয়টি নিয়ে কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা কালবেলাকে বলেন, "অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগের সিদ্ধান্ত সঠিক, তবে এটি নিশ্চিত করা উচিত যে, রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হয়ে দক্ষ এবং সততার সঙ্গে লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়।" তিনি আরও বলেন, "ফোর্সের কার্যক্রমের ওপর নিবিড় নজরদারি থাকতে হবে, যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না হয়।"

নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং সদস্যদের দায়িত্ব

এই ফোর্সে নিয়োগ প্রাপ্ত সদস্যরা শুধুমাত্র শপিংমল এবং বড় আবাসিক এলাকায় কাজ করবেন, যেখানে জনসমাগম বেশি। প্রাথমিকভাবে, ৪৮টি থানায় প্রতিটি থানা থেকে ১০ জন করে সদস্য নিয়োগ করা হবে, তবে ক্যান্টনমেন্ট ও আদাবর থানায় এই ফোর্স থাকবে না।

নিয়োগ পাওয়া সদস্যরা কোনো বেতন বা ভাতা পাবেন না, তবে তারা একটি সার্টিফিকেট পাবেন এবং স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পুলিশকে সহায়তা করবেন। এই ফোর্সের সদস্যদের হাতে একটি বিশেষ ব্যান্ড থাকবে, যা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করবে। তাদের পুলিশি ক্ষমতা যেমন হবে, তেমনি তারা আইনগতভাবে পুলিশ সদস্যদের মতো একই সুরক্ষা পাবে।

ফোর্স নিয়োগের পূর্বশর্ত ও প্রয়োজনীয়তা

বিশ্বের অন্যান্য শহরগুলিতে এই ধরনের সহায়ক পুলিশ নিয়োগে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এই ফোর্সের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নীতিমালা এবং মানদণ্ড আগে থেকেই নির্ধারণ করা উচিত। যদি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপ ঘটে, তবে এর সুফল পাওয়া কঠিন হবে।

এছাড়া, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেছেন, "এই ফোর্সের সদস্যদের অবশ্যই সততা, দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ থাকতে হবে, আর তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও প্রভাবমুক্ত হতে হবে।"

সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ

এই নতুন ফোর্সের কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হলে, তা ঢাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে এটি বাস্তবায়নে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা এবং নজরদারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এটি ঢাকা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে এবং পুলিশি কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এক নতুন দৃষ্টিকোণ তৈরি করবে, যা আগামীতে দেশে অন্যান্য শহরগুলিতেও প্রয়োগ হতে পারে।

کوئی تبصرہ نہیں ملا