close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ঢাকা থেকে রোডমার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে, চলছে সমাবেশ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে রাজধানী থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চ। চার দফা দাবিতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভে উত্তাল সমাবেশ, সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো বামপন্থী শক্তিগুলো।..

রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হওয়া দুই দিনের রোডমার্চ আজ চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় পৌঁছে পরিণত হয়েছে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে। বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচি দেশের চার দফা জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট দাবির পক্ষে এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।

আজ বিকেল পৌনে পাঁচটায় বন্দর এলাকার ৪ নম্বর গেটের সামনে পৌঁছে রোডমার্চের বহর, সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে শুরু হয় জোরালো সমাবেশ। এ সময় সমাবেশস্থল মুখর হয়ে ওঠে বিভিন্ন স্লোগানে— ‘বন্দর-করিডর, বিদেশিদের দেব না’, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া চলবে না’, ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিল করো’, ইত্যাদি। সমাবেশে বক্তারা স্পষ্টভাবে বলেন, “নিউমুরিং টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া চলবে না।”

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করা এই রোডমার্চের চার দফা মূল দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। দাবিগুলো হলো:

  1. নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া চলবে না এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় পরিচালনা করতে হবে।

  2. রাখাইনে করিডর দেওয়ার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

  3. স্টারলিংক, সমরাস্ত্র কারখানা ও করিডরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চক্রে জড়ানোর চেষ্টা বন্ধ করতে হবে।

  4. মার্কিন-ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি প্রকাশ করতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী অসম চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে।

ঢাকা থেকে শুরু করে ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের পথে পথে হয়েছে মিছিল ও সমাবেশ। বিশেষ করে আজ সকালে ফেনীতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতারা বারবার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলেন। রুহিন হোসেন বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর হলো দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। এই বন্দরকে ইজারা দেওয়ার যে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, তা দেশের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র।”

সমাবেশে আরও দাবি করা হয়, সরকার যদি জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

রুহিন হোসেন আরও বলেন, “চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বাংলাদেশ। সেই চেতনাকে সামনে রেখে আমরা এই রোডমার্চ আয়োজন করেছি। পাহাড়িদের ওপর নিপীড়ন, বৈষম্য আর বৈদেশিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “এই রোডমার্চ কোনো শেষ নয়, এটা এক দীর্ঘ আন্দোলনের শুরু।”

সমাপনী বক্তৃতায় নেতারা ঘোষণা দেন— সরকার যদি জনগণের এই চার দফা দাবি উপেক্ষা করে, তাহলে তারা থেমে থাকবে না। বরং আজকের সমাবেশ থেকে শুরু করে সারা দেশের সর্বস্তরে বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।

এই রোডমার্চে অংশ নেওয়া হাজারো নেতা-কর্মী শুধু প্রতিবাদ জানাতেই আসেননি, তারা এসেছেন বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিতে।

সংক্ষেপে মূল পয়েন্টগুলো:

  • নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে নয়, রাষ্ট্রের অধীনে থাকতে হবে

  • সাম্রাজ্যবাদী চুক্তি, স্টারলিংক ও করিডর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক

  • রোডমার্চে ফেনী ও চট্টগ্রামে বিশাল সমাবেশ

  • বামপন্থী দলগুলোর নেতৃত্বে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ প্ল্যাটফর্ম

  • ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের ইঙ্গিত

চট্টগ্রাম বন্দরের ভাগ্য নির্ধারণের লড়াই এখন রাস্তায়। রাষ্ট্রীয় সম্পদের নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় শুরু হওয়া এই আন্দোলন নতুন মোড় নিতে চলেছে— যা দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তীব্র আলোড়ন তুলেছে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली