close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের অনুমোদন বাতিলে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Dhaka University students have issued a 24-hour ultimatum to revoke the approval of the UN Human Rights Office in Dhaka, warning of a nationwide student movement if demands are ignored.

জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের অনুমোদন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল না হলে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঢাবির বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবিতে তীব্র অবস্থান নিয়েছে। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে—২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই অফিসের অনুমোদন বাতিল না হলে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি চালু করা হবে। এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয় রোববার (১০ আগস্ট) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে।

“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা” ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষার্থী জিয়াউল হক। বক্তব্যে তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের বিভিন্ন নীতি ও পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান। তার দাবি, এই অফিস বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করলে দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক কাঠামো গভীর সংকটে পড়বে।

জিয়াউল হক বলেন, অতীতে বিদেশি এনজিওর অর্থায়নে স্কুল সিলেবাসে ‘শরীফ-শরীফা’র গল্প সংযোজন করে সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার বিষয়কে স্বাভাবিক হিসেবে প্রচারের চেষ্টা হয়েছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের ওয়েবসাইটেও এলজিবিটিকিউ বা সমকামিতাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তা প্রসারের কথা উল্লেখ রয়েছে। এই নীতি অনুসরণ করলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বাধ্যতামূলকভাবে সমকামীতা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যা বাংলাদেশের প্রজন্মকে নৈতিক অধঃপতনের দিকে ঠেলে দেবে।

তিনি আরও দাবি করেন, এর ফলে লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রবণতা বাড়বে, অঙ্গহানির মাধ্যমে যৌন পরিচয় পরিবর্তনকে উৎসাহ দেওয়া হবে এবং তরুণদের মধ্যে মানসিক বিকৃতি দেখা দেবে। অভিভাবকরা সন্তানদের নৈতিক অবক্ষয়ে হতাশ হয়ে পড়বেন, যা পরিবার ও সমাজে স্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া, পুনরায় কোটা প্রথা চালু করে সমকামী ও ট্রান্সজেন্ডার কোটার পাশাপাশি ‘সমকামী ইমাম’ কোটাও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের উপস্থিতিকে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে জিয়াউল হক বলেন, এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে উৎসাহ দেবে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। একইসঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এ ধরনের আন্তর্জাতিক প্রভাবের কারণে পতিতাবৃত্তি বৈধ হতে পারে, ধর্ম পালন ও প্রচারের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের মতো গুরুতর অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় বাধা আসতে পারে।

তিনি বলেন, “কোনো অবস্থাতেই জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বাংলাদেশে থাকতে পারে না। আমরা একাধিকবার সরকারকে জানিয়েছি, কিন্তু কর্ণপাত করা হয়নি। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি—এই সময়ের মধ্যে অফিস বাতিল করতে হবে, নইলে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে লাগাতার কঠোর আন্দোলনে যাবো।”

এই ঘোষণার পর উপস্থিত শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, সরকারের উচিত দেশের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক যেকোনো আন্তর্জাতিক প্রভাব থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ২৪ ঘণ্টার এই আল্টিমেটাম সরকারের জন্য একটি কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষায় পরিণত হতে পারে। সরকার যদি শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে দেরি করে, তাহলে আন্দোলন ঢাকার গণ্ডি পেরিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং তা বড় ধরনের জনআন্দোলনে রূপ নিতে পারে।

Nessun commento trovato