ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেইমানি’ আখ্যা দিয়ে সাবেক ছাত্রনেত্রী উমামা ফাতেমা রাতের মধ্যে কমিটি স্থগিতের দাবি জানিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে ফের উত্তাল হচ্ছে ক্যাম্পাস। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র উমামা ফাতেমা শুক্রবার (৮ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নতুন এই কমিটিকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সরাসরি বেইমানি’ বলে অভিহিত করেছেন।
স্ট্যাটাসে উমামা লেখেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই ঢাবির ১৮টি হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সে সময় আমি ও আরও কয়েকজন সচেতন শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলাম। সেই আন্দোলনের ফলেই ছাত্রলীগমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে ওঠার স্বপ্ন অনেকটা বাস্তবের কাছাকাছি এসেছিল।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আবু সাঈদের শাহাদাত ১৬ জুলাই ছাত্রসমাজকে যে সাহস ও চেতনা দিয়েছিল, তা আজ আবার গুপ্ত রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। প্রকাশ্য কমিটি ঘোষণা সেই শাহাদাত ও আন্দোলনের প্রতি অবজ্ঞা এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।”
উমামা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আজ রাতের মধ্যেই এই কমিটি স্থগিত করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। এই লড়াই কোনো দলের পক্ষে নয়, এটি আমাদের রক্ত ও আত্মত্যাগের মর্যাদা রক্ষার লড়াই।
এদিকে, উমামার এই হুঁশিয়ারি ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। তার পোস্টে হাজারো শিক্ষার্থী সমর্থন জানিয়েছেন এবং মন্তব্যে ক্যাম্পাসে গণআন্দোলনের প্রস্তুতির কথাও উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন করে কমিটি গঠনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির অস্থিরতা আবার চরমে পৌঁছাতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ ও রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে সোচ্চার ছিল, সেখানে গোপন ও দলীয় স্বার্থে কমিটি গঠনের ঘটনা আবারো উত্তেজনা তৈরি করেছে।
ঢাবির প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন সময়ের দাবি। ছাত্রদের আত্মত্যাগ ও প্রতিবাদ আন্দোলনের ইতিহাসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে অস্থিরতা এড়াতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি।