close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ঢাবি ছাত্র সাম্য হ'ত্যা'র নেপথ্যের কাহিনি ফাঁস, গ্রেপ্তার ৮..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল, বলছে পুলিশ। আটজনকে গ্রেপ্তার করে হত্যার পেছনের নৃশংস বাস্তবতা উন্মোচন করেছে গোয়েন্দারা। বিকেলে ডিএমপি কমিশনার জানাবেন আরও ভয়াবহ তথ্য।..

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্যকে যারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল, অবশেষে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার (২১ মে) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারি ও দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর হত্যার পেছনে থাকা মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাম্য হত্যাকাণ্ডটি কোনো সাধারণ অপরাধ নয়, বরং একটি ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত হামলা ছিল—যা গোটা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

ঘটনার পেছনের ভয়াবহতা

সাম্য হত্যার ঘটনা ঘটে চলতি বছরের ১৩ মে রাতে। ঢাবির নিকটবর্তী ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর অতর্কিতে ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সাম্যকে টার্গেট করে দুর্বৃত্তরা একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তখন রাত প্রায় ১১টা। পরে আশপাশের মানুষ ও বন্ধুরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তার মৃত্যুর পরদিন, অর্থাৎ ১৪ মে, সাম্যের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। এরপর থেকেই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্তে নামে।

গ্রেপ্তার ও রহস্য উন্মোচনের ঘোষণা

মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো ডিএমপির বার্তায় জানানো হয়, ঢাবি ছাত্র সাম্য হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে গোয়েন্দারা এবং হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্তারিত তথ্য জানাতে আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে একটি ব্রিফিং করবেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী

সূত্র জানায়, তদন্তে এমন কিছু তথ্য উঠে এসেছে যা থেকে বোঝা যাচ্ছে—সাম্য হত্যার পেছনে ব্যক্তি শত্রুতা, রাজনীতি সংশ্লিষ্টতা কিংবা দখলদারিত্বজনিত দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। গোয়েন্দা বিভাগের একটি বিশেষ দল দীর্ঘদিন ধরে ঢাবি সংলগ্ন এলাকাগুলোতে সিসিটিভি ফুটেজ, কলরেকর্ড, প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য ও ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জড়িতদের শনাক্ত করে।

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে আতঙ্ক ও ক্ষোভ

সাম্যের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্যার এফ রহমান হলসহ বিভিন্ন হলে মোমবাতি প্রজ্বালন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা এই হত্যাকাণ্ডকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ডিএমপির প্রেস ব্রিফিং নিয়ে জনমনে কৌতূহল

ডিএমপি কমিশনারের আজকের প্রেস ব্রিফিং নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রাজনীতিক, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের মধ্যেও ব্যাপক কৌতূহল দেখা দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই ব্রিফিংয়ে সাম্য হত্যার পেছনের প্রকৃত উদ্দেশ্য, গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ পাবে।

এই হত্যাকাণ্ড যে ঢাবির পরিবেশকে গভীরভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন শুধু দেখার বিষয়, ডিএমপির তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ ও দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয়।

没有找到评论