উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ ৪৪ জনের মধ্যে ৮ জন সংকটাপন্ন। আপাতত বিদেশে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানালেন বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক।
উত্তরা এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের আপাতত বিদেশে পাঠানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪৪ জনের মধ্যে এখনো ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ১৩ জন গুরুতর এবং বাকিরা মাঝারি মাত্রার দগ্ধতা নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমরা রোগীদের তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি — আশঙ্কাজনক, গুরুতর এবং মধ্যম পর্যায়ের দগ্ধ। তবে এই ক্যাটাগরিগুলো স্থির নয়, রোগীদের অবস্থা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে পারে।” তিনি আরও জানান, সিঙ্গাপুরের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে এই শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে।
পরিচালক আরও জানান, “আজ আমরা আমাদের প্রতিটি রোগীকে নিয়ে আলাদা করে আলোচনা করেছি। কারও জরুরি অপারেশন দরকার কি না, কার কতোটা ড্রেসিং প্রয়োজন, কোনো ওষুধ পরিবর্তন হবে কি না— এসব নিয়ে আমাদের চিকিৎসক দল বিশ্লেষণ করেছে।” তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি দলের চিকিৎসক এখনো কতদিন থাকবেন তা নির্ধারিত হয়নি। তাদের ইচ্ছা ও সময়ানুযায়ী সেটি ঠিক করা হবে।
নাসির উদ্দিন জানান, সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ আমাদের চিকিৎসা প্রক্রিয়ার অনেক অংশের সঙ্গে একমত হয়েছেন। কিছু বিষয়ে আমাদের আরও উন্নত পরামর্শও দিয়েছেন। তাছাড়া, আমেরিকার পক্ষ থেকেও আমাদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সবার পরামর্শ নিচ্ছি।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশে রোগী পাঠানোর কোনো প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে না। আমরা চাই না কারও অবস্থার অবনতি হোক। তবে প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে তা বিবেচনা করা হবে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দগ্ধ ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা একযোগে কাজ করছেন। চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় গতি এবং গুণগত মান ধরে রাখতে প্রতিটি রোগীর অগ্রগতি নিয়মিত মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
এছাড়া নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা চাই না কাউকে দেরিতে চিকিৎসা দিতে। অপারেশন, ড্রেসিং, মেডিকেশন— প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও গুণগত মান নিশ্চিত করছি।
বর্তমানে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটই দগ্ধ রোগীদের মূল চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। এখানকার চিকিৎসা পরিকাঠামো, ওষুধ, চিকিৎসক এবং বিদেশি পরামর্শদাতাদের সহযোগিতায় দগ্ধরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।