দেশে স্থিতিশীলতা রক্ষায় বৃহত্তর ঐক্যের ডাক: চাপের মুখে অবস্থান পরিষ্কার করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে এক অনির্ধারিত বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন প্রধান দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সরকার বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বা..

আজ শনিবার, রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে এক অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব—নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার—সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নানা অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবির মুখোমুখি হতে হচ্ছে, যার ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদ মনে করে, বর্তমান বাস্তবতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্বগুলো নিরবিচারে পালন করতে গেলে জাতীয় ঐক্য অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে নানা মহল থেকে সরকারের এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য, অবাঞ্ছিত কর্মসূচি এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত যেমন উঠে এসেছে, তেমনি পরাজিত গোষ্ঠীর প্ররোচনাতেও সরকারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। এসব প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদ জাতিকে আশ্বস্ত করেছে যে, সরকার নিরপেক্ষতার নীতিতে অবিচল থেকে দায়িত্ব পালন করে যাবে।

সভা থেকে জানানো হয়, সরকার অচিরেই রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া যাচাই করে জনগণের সামনে সরকারের অবস্থান স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করবে। যদি পরিণত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন অসম্ভব হয়ে ওঠে, তবে সরকার তার দায়িত্বের সীমা এবং চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জাতিকে অবহিত করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।

উপদেষ্টা পরিষদ আরও জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উদ্ভূত জনআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে কাজ করছে। এই সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে—একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ এবং অবাধ নির্বাচন সম্পন্ন করা, ন্যায়ভিত্তিক বিচার প্রক্রিয়া চালু রাখা এবং প্রশাসনিক কাঠামোয় যুগোপযোগী সংস্কার আনা। তবে কেউ যদি এই প্রক্রিয়াকে ভন্ডুল করতে চায়, তাহলে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হবে।

এই বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের পেছনে কোনো দলীয় স্বার্থ নেই। আমরা শুধু রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে চাই। তাই সংকট সৃষ্টি হলে আমরা পিছিয়ে যাব না বরং সামনে এগিয়ে প্রয়োজনে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, শঙ্কা এবং আন্তর্জাতিক চাপ—সবমিলিয়ে সরকারের জন্য এক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে উপদেষ্টা পরিষদের এই বিবৃতি কিছুটা হলেও স্পষ্টতা এনে দিয়েছে সরকার কি ভাবছে এবং আগামী দিনগুলোতে কীভাবে আগাবে।

শেষ কথা হলো— সরকার এখন আর নীরব দর্শক নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ষড়যন্ত্র এবং বাধাগ্রস্ত প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতির সামনে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করতে প্রস্তুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

کوئی تبصرہ نہیں ملا