দেশে বেকারত্বের সংকট: ২৬ লাখ ৬০ হাজার বেকার, বাড়তে পারে আরো

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে বেকারত্বের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে এখন ২৬ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বছর
বাংলাদেশে বেকারত্বের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে এখন ২৬ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। এক বছরের ব্যবধানে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করছে। বেকারত্বের হার বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সংকট বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে ৪.৪৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর এ হার ছিল ৪.০৭ শতাংশ। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত বছরের তুলনায় কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে গেছে। কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৭ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার থেকে কমে হয়েছে ৬ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার। অর্থাৎ, এক বছরে ৩৫ লাখ কর্মসংস্থান হারিয়ে গেছে। বিশেষত কৃষি খাতে প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। এই খাতে এক বছরে ১৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষ কাজ হারিয়েছে। একই সময়ে শিল্প খাতে কর্মসংস্থান ৭ লাখ ৬০ হাজার কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজারে। বিনিয়োগ সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দায়ী অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বিনিয়োগে স্থবিরতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা এই সংকটের প্রধান কারণ। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, "বিনিয়োগ বাড়লেই উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু গত এক বছরে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।" শিল্প খাতের নেতারা জানান, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট, ব্যাংকের উচ্চ সুদহার এবং অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশের অভাব কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "বিনিয়োগ না থাকার ফলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।" বিবিএসের নতুন জরিপ পদ্ধতি বিবিএস প্রথমবারের মতো শ্রমশক্তি জরিপে ১৯তম আইসিএলএস পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। এই পদ্ধতি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই অনুসরণ করা হয়। জরিপে রোটেটিং প্যানেল স্যাম্পলিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। সমাধানের পথে নজরদারি প্রয়োজন অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কর্মসংস্থান বাড়াতে এবং বেকারত্ব কমাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গ্যাস-বিদ্যুতের সহজলভ্যতাও অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে বেকারত্বের এই ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। নয়তো ভবিষ্যতে এই সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।
Keine Kommentare gefunden