বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিস্ফোরক মোড় নিয়েছে যখন জানা গেলো, ড. ইউনূস নিজেই বিদায় নিতে চান। তবে এই পদক্ষেপ শুধুই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক চক্রান্তের নাটকীয় পরিণতি।
নিজ হাতে তৈরি ফাঁদে পড়লেন ইউনূস
বলা হয়, এই পরিস্থিতি ড. ইউনূস নিজেই তৈরি করেছেন। তিনি মূলত কিছু ষড়যন্ত্রকারীদের—যাদের অনেকেই নৈরাজ্যবাদী, জাশি ও এনসিপি ঘরানার—মুঠোর মধ্যে পড়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছিলেন। এতে একদিকে যেমন সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়, তেমনি রাজনীতিতে অস্থিরতা বাড়তে থাকে।
এই জোট মূলত নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখার পাঁয়তারা করছিল। তারা চাচ্ছিল সংবিধান সংস্কার, আইন পরিবর্তন ইত্যাদি অজুহাতে নির্বাচন দেরি করাতে। তবে তাদের এই পরিকল্পনা ভেস্তে দেয় এক ব্যক্তিই—সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার।
ওয়াকারের দৃঢ় অবস্থান ও ষড়যন্ত্রের ছক
জেনারেল ওয়াকার স্পষ্টভাবেই নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেন এবং বলেন ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। বিএনপি যদিও নির্বাচন নিয়ে চাপে রাখেনি, কিন্তু একটি রোডম্যাপ দাবি করে আসছিল।
এই অবস্থায়, সরকার এবং এর ভেতরের চক্রান্তকারীরা পরিকল্পনা করে জেনারেল ওয়াকারকে সরানোর। অজানা ও অপ্রসিদ্ধ খলিলুর রহমানকে আগে রোহিঙ্গা বিষয়ক পদে এবং পরে নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে আনা হয়। তার মাধ্যমেই শুরু হয় সেনা অভ্যুত্থানের ছক।
অজানা সূত্রে জানা যায়, সেনাপ্রধানকে সরিয়ে জেনারেল কামরুলকে আনার পরিকল্পনা হয়। ইতোমধ্যেই ওয়াকারকে সরানোর চিঠি পর্যন্ত তৈরি হয়ে যায়। নৈরাজ্যবাদীদের ইউটিউব ও পোস্টে স্পষ্ট সংকেত মেলে যে সেনাবাহিনী নাকি ‘সংস্কারের’ পক্ষে চলে এসেছে।
বিপর্যয়ের সূচনা ও ইউনূসের পতনের ইঙ্গিত
এই ষড়যন্ত্রের খবর সেনানিবাসে পৌঁছতেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সেনাপ্রধান ওয়াকার নিজেই প্রেসিডেন্ট ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন, সেখানে মুখোমুখি হয় বিস্ফোরক আলোচনা।
এর চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে সাম্প্রতিক সেনা দরবারে। সেখানে সেনা প্রধানের বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে গভীর মতবিরোধ চলছে। আর এই সংঘাতের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন ইউনূস নিজেই।
বিএনপি ও জনগণের প্রতিক্রিয়া
বিএনপি সেনাবাহিনীর নির্বাচনী মনোভাবকে সমর্থন করলেও সরাসরি চাপ দেয়নি। কিন্তু ইউনূসের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় পুরো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটই বদলে যায়। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরেই ইউনূসবিরোধী মনোভাব তৈরি হয়, এবং এই অবস্থান তাকে কোণঠাসা করে ফেলে।
সরকারের পতনের ঘণ্টাধ্বনি
এই সরকার বিগত ৯ মাসে কোনো দৃশ্যমান সাফল্য দেখাতে পারেনি। আওয়ামী লীগের বিচার হয়নি, দুর্নীতির অভিযোগে সরকারের উপদেষ্টারা জর্জরিত, আর নির্বাচনের নামে চলছে নাটক। এর মধ্যে সেনাবাহিনী সংস্কারের ‘মূলা’ দেখিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা স্পষ্ট হয়েছে।
কিন্তু ইউনূসের এই রাজনৈতিক খেলা ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে তার দিকেই। সেনাপ্রধানকে সরিয়ে নিজেদের পছন্দের লোক বসানোর চেষ্টা, নৈরাজ্যবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চলা সরকার—সব মিলিয়ে একটি চূড়ান্ত ব্যর্থতা।
শেষ কথা: কে জিতলো, কে হারলো?
শেষ পর্যন্ত, ইউনূস পদত্যাগ করতে চান এই প্রচার শুরু হয়। বলা হচ্ছে, বিএনপির কর্মকাণ্ড, ইশরাকের শপথসহ নানা কারণে তিনি বিরক্ত। কিন্তু প্রকৃত কারণ আরও গভীর। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অভ্যুত্থানের ছক ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ইউনূস নিজেই 'ক্যু’র শিকার।
এই নাটকের পরাজিত পক্ষ শুধু ড. ইউনূস নন, বরং পুরো জাশি-এনসিপি-নৈরাজ্যবাদী জোট—যারা একসময় পুরো দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলতে চেয়েছিল।
এই ঘটনাপ্রবাহ আবারও প্রমাণ করলো—রাষ্ট্র পরিচালনায় ষড়যন্ত্রের পথ যতই সুপরিকল্পিত হোক না কেন, জনগণ ও রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলো সবশেষে সত্যকে জয়ী করে তোলে।