ড. ইউনূস এখন ‘শান্তির স্বৈরাচার’? – তীব্র সমালোচনায় সাংবাদিক মাসুদ কামাল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মাসুদ কামাল। তার দাবি— ড. ইউনূস এমন এক ‘শান্তি’র পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন, যেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও ভয় পায়। তি..

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান নিয়ে এবার তীব্র সমালোচনা করলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ড. ইউনূস এমন এক ধরনের পরিবেশ তৈরি করছেন যেখানে ‘শান্তি’র নামে সাধারণ মানুষ নিজের কষ্টের কথাও প্রকাশ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিকে তিনি ব্যাখ্যা করেন ‘শান্তির স্বৈরাচার’ হিসেবে।

মাসুদ কামালের মতে, দেশে এক সময় আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন— কেউ নদীর চরে, কেউবা জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই সময় আওয়ামী লীগকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। অথচ এখন, যখন ড. ইউনূসের আশেপাশে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে, কেউ অন্যায়ের শিকার হলেও মুখ খুলতে ভয় পায়— তখন সেটি ‘শান্তি’র লেবেল পাচ্ছে। তিনি বলেন, “ড. ইউনূস এমন এক পরিবেশ গড়েছেন যেখানে মানুষকে মারধর করা হয়, অথচ কেউ পাশে দাঁড়ায় না। এটি কি শান্তি?”

তিনি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ড. ইউনূস এখন যে আচরণ করছেন, তাতে তাকেও বিদায় নিতে হবে। তবে মনে হচ্ছে তিনি নিজে সেই বিদায় নিতে পারবেন না।”

ড. ইউনূসের রাজনৈতিক জ্ঞানের ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মাসুদ কামাল। তার মতে, “তার সামনে সুযোগ ছিল— জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ করেননি, বরং এককভাবে চলার চেষ্টা করছেন।” এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উনি রাজনীতি বোঝেন না। এ কারণেই হয়তো সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।”

একটি পুরনো বক্তব্যের উদাহরণ টেনে মাসুদ কামাল বলেন, “২৫ আগস্টের একটি সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘আমরা অন্য জগতের মানুষ’। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি অন্যদের ভুল দেখেন না? তখন তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই তো ভুল করি, আমি বুঝিও না।’ এমন একজন মানুষ যিনি নিজের ভুল স্বীকার করেন, অথচ দায়িত্বশীল পদে থেকে পিছিয়ে থাকেন— তাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা কি অন্যায়?”

সাক্ষাৎকারের শেষ পর্যায়ে মাসুদ কামাল আরও একটি আলোচিত বিষয় উত্থাপন করেন— ‘অপরিহার্যতা’র ধারণা। তিনি বলেন, “যদি প্রশ্ন উঠে যে, সেই সময় ড. ইউনূসের কোনো বিকল্প ছিল কি না— সেটি তার দেখার বিষয় নয়। এক সময় শেখ হাসিনাকেও কেউ কেউ বলত— আপনি ছাড়া দেশ চলবে না। কিন্তু আজ তিনি নেই, দেশ ঠিকই চলছে। পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়। যারা তা মানতে পারেন না, তাদের মনেই স্বৈরাচার বাস করে।”

এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। কেউ একে দেখছেন ‘সাহসী ও বাস্তবধর্মী মন্তব্য’ হিসেবে, আবার কেউ বলছেন এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত আক্রমণ। বিশেষ করে ড. ইউনূসের মতো একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ্যে এমন ভাষায় সমালোচনা করার ঘটনাকে অনেকে অবাক দৃষ্টিতে দেখছেন।

তবে এটুকু স্পষ্ট— মাসুদ কামালের বক্তব্যে ড. ইউনূসের রাজনৈতিক অবস্থান ও ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগামীর দিনগুলোতে আরও চর্চিত হবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator