close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

চট্টগ্রামে জিকা ভাইরাসের হানা , দুজন আক্রান্ত, গর্ভবতীদের জন্য বাড়ছে শঙ্কা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Two people in Chattogram have tested positive for the Zika virus, marking the region's first detection. Authorities await final confirmation from IEDCR, while doctors warn of serious risks for pr..

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো দুজনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আইইডিসিআরের চূড়ান্ত ঘোষণার অপেক্ষায় থাকলেও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন—এটি গর্ভবতীদের জন্য ভয়ংকর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

 

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো দুই ব্যক্তির শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই ঘটনাটি জনস্বাস্থ্য সেক্টরে নতুন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য। যদিও এখনো পর্যন্ত রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি, তবুও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “গতকাল রাতে একটি বেসরকারি ল্যাবের পরীক্ষায় দুজনের শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আমরা আইইডিসিআরকে বিষয়টি জানিয়েছি, এখন তারা যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।”

সূত্র জানায়, আক্রান্ত দুজনই চল্লিশোর্ধ্ব, একজন পুরুষ ও একজন নারী। তারা নিজ নিজ অসুস্থতার কারণে প্রথমে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়ালিউল্লাহ এবং ডা. মো. নুরুন্নবীর চেম্বারে যান। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তারা চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ল্যাব—‘এপিক হেলথ কেয়ার’-এ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। সেখানেই পরীক্ষায় জিকা পজিটিভ আসে। রিপোর্ট হাতে পেয়েই ল্যাব কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য বিভাগকে বিষয়টি অবহিত করে।

চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, একই কিটে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জিকা ভাইরাস পরীক্ষা করা হয়। উপসর্গ অনুযায়ী নমুনা পরীক্ষায় জিকা পজিটিভ এসেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আইইডিসিআরের। তারা চাইলে পুনরায় পরীক্ষা করতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, আক্রান্তদের মধ্যে জ্বর, র‍্যাশ, শরীর ব্যথা ও হাত-পায়ের ফোলা দেখা গেছে। যদিও জিকা ভাইরাসে সাধারণত প্রাণহানির আশঙ্কা কম, তবে গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে। কারণ, জিকা ভাইরাস গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, যার ফলে Microcephaly নামক জটিলতা দেখা দিতে পারে—যেখানে শিশুর মাথার আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হয় এবং মানসিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এমন উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। আক্রান্তদের বিচ্ছিন্ন রেখে চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যাতে ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে।

চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৩০ জন চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা ইঙ্গিত দেয়—এডিস মশাবাহিত রোগগুলোর প্রকোপ বাড়ছে। সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা—এই তিনটি ভাইরাসই এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। সেজন্য আমরা জনগণকে আরও বেশি সচেতন থাকার অনুরোধ করছি।

স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে, সেসব এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

জনগণকে নিয়মিত মশারি ব্যবহার, ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা এবং শরীরে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানা অত্যন্ত জরুরি।

আইইডিসিআর-এর চূড়ান্ত ঘোষণার পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। তবে এখন থেকেই সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

Tidak ada komentar yang ditemukan