close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
চমকপ্রদ জামিন পেলেন পি কে হালদার: কলকাতার আদালত থেকে মুক্তি, শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর


বাংলাদেশের ১১ হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) এবং তার দুই সহযোগীকে জামিন দিয়েছেন কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের অন্তর্গত নগর দায়রা আদালত। শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, আদালত এই জামিন মঞ্জুর করে। জামিন পেয়েছেন পি কে হালদারের সঙ্গে স্বপন মিস্ত্রি ও উত্তম মিস্ত্রি, যারা একই মামলায় অভিযুক্ত।
জামিনের শর্ত
আদালত তিন অভিযুক্তকে ১০ লাখ রুপি বন্ড জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর সঙ্গে আরও ৫ লাখ রুপি লোকাল বন্ড জমা দিতে হবে, যার জন্য আদালতের পরিচিত কেউ জামিনদাতা হতে হবে। মোট ১৫ লাখ রুপি বন্ড জমা দিয়ে জামিন পেতে হবে। আদালত এই শর্তে আরও বলেছে, মামলার চলাকালীন সময়ে অভিযুক্তদের নিয়মিতভাবে আদালতে হাজিরা দিতে হবে এবং তাদের রাজ্য বা দেশ ত্যাগ করার অনুমতি নেই।
আইনজীবী মিলন মুখার্জির যুক্তি
শুক্রবার শুনানির সময় পি কে হালদারের পক্ষে জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী মিলন মুখার্জি। তিনি আদালতে বলেন, “আড়াই বছর হয়ে গেছে হালদারের গ্রেফতারের পর। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, মানিলন্ডারিং মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সাত বছর জেল হতে পারে। তবে আড়াই বছর জেল হেফাজতে থাকার পর জামিন প্রদান কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না।"
ইডির আইনজীবীর বিরোধিতা
অন্যদিকে, ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জামিনের বিরোধিতা করেন এবং মামলার গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় কোর্ট মুলতবি করেন এবং শুক্রবার তাদের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন। পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ৯ জানুয়ারি ধার্য করা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়ার বিস্তারিত
২০২২ সালের ১৪ মে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বৈদিক ভিলেজ থেকে পি কে হালদার এবং তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তারা অবৈধভাবে অর্থপাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন। তাদের বিরুদ্ধে প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-২০০২ এবং দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়।
পূর্ববর্তী জামিন
একের পর এক জামিন প্রাপ্তির ঘটনা চলমান। এর আগে, ২৭ নভেম্বর, পি কে হালদারের ভাই প্রানেশ হালদার, আমিনা সুলতানা (শর্মি হালদার), ও ইমন হোসেনও জামিন পেয়ে ছিলেন। তাদেরও ভারতে থাকা অবস্থায় আদালতে হাজিরা দিতে হবে এবং দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।
এখনো পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের মুক্তি পেতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে। তবে এদের মুক্তির জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, এবং সম্ভবত ৭ দিনের মধ্যে বাকি অভিযুক্তরা জেল থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
শেষ কথা
এটি একটি বড় আইনগত ঘটনা, যার মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের অর্থপাচারের কেলেঙ্কারি ও আন্তর্জাতিক দুর্নীতির জট খুলতে পারে। আইনজীবী ও বিচারকদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক এবং জামিনের শর্ত নিয়ে কৌতূহল অনেকের মনে প্রশ্ন তুলছে, তবে আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন কী সিদ্ধান্ত আসবে, তা নিয়ে দেশ-বিদেশের নজর থাকবে।
کوئی تبصرہ نہیں ملا