close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চমকে দিল আইএমএফ: পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ, ক্ষু ব্ধ প্রতিক্রিয়া ভারতের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে ভারত। তারা দাবি করেছে, এই অর্থ ব্যবহৃত হতে পারে ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্তজুড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে। প্রশ্..

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ ছাড় করেছে, যা দেশটির অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঋণ ছাড়ের ঘটনা ভারতীয় পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

গত ৯ মে, শুক্রবার, আইএমএফ তাদের চলমান ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের মূল্যায়ন সম্পন্ন করে এবং এরপরই এই ১০০ কোটি ডলারের নগদ অর্থ ছাড়ের ঘোষণা দেয়। শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে জলবায়ু সহনশীলতা তহবিল থেকে আরও ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি।

এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হলেও, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি একেবারেই বিপরীত। ভারত মনে করছে, এই অর্থ হয়তো সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবহৃত হতে পারে—যার কড়া নজির অতীতে দেখা গেছে।


ভারতের কণ্ঠে ক্ষোভ: ‘এই তহবিল দিয়ে চালানো হয় হামলা’

ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি ১০ মে এক্স (সাবেক টুইটার)–এ একাধিক পোস্টে জানান,

“আমি বুঝে উঠতে পারছি না, কীভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে এই অঞ্চলটিতে উত্তেজনা হ্রাস পাবে, যখন একটি দেশ ক্রমাগত অস্ত্র কিনে সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে এবং সেই অর্থের উৎস হয় আইএমএফ।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, এই ঋণের একটি বড় অংশ ভারতের রাজৌরি, পুঞ্চ, উরি, তাংধরসহ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে সন্ত্রাসী হামলায় ব্যবহৃত হতে পারে।


পাকিস্তানের ট্র্যাক রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন

ভারতের দাবি, পাকিস্তানের অতীত ইতিহাস প্রমাণ করে যে তারা বহুবার আন্তর্জাতিক সহায়তা অপব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ বহুবার এসেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়:

“পাকিস্তানের অর্থনৈতিক নীতিমালা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রমাণ করে তারা আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য উপযুক্ত নয়, বিশেষ করে যখন সেই অর্থ হয় অস্ত্র ক্রয় কিংবা কাশ্মীরে উসকানি তৈরিতে ব্যয় হয়।”


আইএমএফের অবস্থান

অন্যদিকে আইএমএফ দাবি করছে, এই তহবিল মূলত অর্থনৈতিক সংস্কার, ঋণ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু সহনশীলতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির মতে, পাকিস্তান সরকারের নীতিগত প্রতিশ্রুতি থাকায় এই সহায়তা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তবে ভারতের প্রশ্ন—এই প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন কে পর্যবেক্ষণ করছে?


বিশ্লেষকদের মত: এই সিদ্ধান্ত কি দক্ষিণ এশিয়াকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে?

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় এমনিতেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক জটিল এবং স্পর্শকাতর। এমন এক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের হাতে বড় অঙ্কের আন্তর্জাতিক ঋণ তুলে দেওয়া সামগ্রিক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহেদুল আলম বলেন:

“যদি এই অর্থ প্রকৃত উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে ব্যয় না হয়, বরং রাজনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে ব্যবহৃত হয়—তাহলে এই সিদ্ধান্ত শুধু পাকিস্তান নয়, গোটা অঞ্চলের জন্য বিপজ্জনক।”


আইএমএফের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ

পাকিস্তানকে অর্থ সহায়তা দেওয়া মানেই একদিকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সহায়তা, অন্যদিকে সন্ত্রাসবাদের পেছনে অর্থ ব্যয়ের ঝুঁকি। এখন প্রশ্ন হলো, আইএমএফ কীভাবে নিশ্চিত করবে যে, এই অর্থ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে ব্যয় হচ্ছে?

ভারতের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এটি এখন একটি সংবেদনশীল এবং কৌশলগত ইস্যু হয়ে উঠেছে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली