চীনা বিজ্ঞানীদের ছত্রাক ষড়যন্ত্র: যুক্তরাষ্ট্রে করোনার চেয়েও ভয়াবহ 'জৈব অস্ত্র' হামলার আশঙ্কা!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দুই চীনা বিজ্ঞানীর হাতে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া এক বিষাক্ত ছত্রাক নিয়ে তীব্র সতর্কতা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন বিশেষজ্ঞ গর্ডন চ্যাং বলেন, এটি করোনার চেয়েও ভয়াবহ জৈব সন্ত্রাসে রূপ নিতে পারে। ফক্স নি..

যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি ধরা পড়েছে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র, যার নেপথ্যে রয়েছেন দুই চীনা গবেষক। তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের চেষ্টা চালিয়েছেন এমন একটি ছত্রাক, যা কেবল ফসলের জন্যই নয়, বরং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি। মার্কিন বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে কৃষি ও নিরাপত্তা বিভাগ— সবাই এখন এই ইস্যুতে তীব্র সতর্ক অবস্থানে। এমনকি বিষয়টিকে ‘জৈব সন্ত্রাসবাদ’ বলেও অভিহিত করা হচ্ছে।

ফক্স নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, ইউনকিং জিয়ান ও জুনিয়ং লিউ নামের দুই চীনা গবেষক ‘ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম’ (Fusarium graminearum) নামক একটি ছত্রাক যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। এই ছত্রাক গম, ভুট্টা, ধান এবং বার্লির মতো প্রধান শস্যের মারাত্মক ক্ষতি করে, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় “head blight” বা ‘মাথার ক্ষয়’।

মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, এই ছত্রাক কেবল শস্যই নষ্ট করে না; এটি মানুষ এবং গবাদিপশুর শরীরে ভয়ানক প্রভাব ফেলে— যেমন বমি, যকৃতের ক্ষতি এবং প্রজনন ব্যবস্থার ত্রুটি। বিজ্ঞানীরা এটিকে একটি "সম্ভাব্য জৈব অস্ত্র" হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। প্রতিবছর এই ছত্রাকের কারণে শুধু কৃষি খাতেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি হয় কোটি কোটি ডলার।

 

গ্রেপ্তার হওয়া দুই বিজ্ঞানী দীর্ঘদিন ধরে চীনে এই ছত্রাক নিয়ে গবেষণা করে আসছিলেন। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ ও ফেডারেল এজেন্সিগুলো ধারণা করছে, এটি কেবল গবেষণার উদ্দেশ্যে ছিল না— বরং একটি পরিকল্পিত জৈব হুমকি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে আনা হচ্ছিল। এমন ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের পেছনে চীনের রাষ্ট্রীয় মদদ থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।

চীন-বিষয়ক শীর্ষ মার্কিন বিশ্লেষক গর্ডন জি চ্যাং একে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি “যুদ্ধ ঘোষণা” হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তিনি বলেন,

 

যদি যুক্তরাষ্ট্র এখনই চীনের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা হয়তো কোভিড-১৯ এর চেয়েও ভয়ানক বিপর্যয়ের শিকার হবে।”

জৈব সন্ত্রাসবাদের এক নতুন অধ্যায়?

বিশ্লেষকদের মতে, করোনাভাইরাসের উদ্ভব নিয়ে যেমন প্রশ্ন ছিল, এই ছত্রাক ষড়যন্ত্রও তেমনি আরও জটিল ও উদ্বেগজনক। কারণ এটি কেবল মহামারির মতো রোগ বিস্তারের জন্য নয়, বরং অর্থনৈতিক এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে টার্গেট করে। এমনকি সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরাও এখন বিষয়টিকে “জৈব সন্ত্রাসবাদের নতুন অধ্যায়” হিসেবে দেখছেন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে— যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেবে? গ্রেপ্তার হওয়া এই বিজ্ঞানীরা কি একা কাজ করছিলেন, নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও বড় কোন চক্র? আর চীন সরকার এ বিষয়ে কী ব্যাখ্যা দেবে?

 

এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক অঙ্গনে চীনবিরোধী বক্তব্য আরও জোরদার হচ্ছে। বেশ কয়েকজন সিনেটর এবং কংগ্রেস সদস্য এরই মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ও সম্পর্ক পর্যালোচনার দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্বজুড়ে যখন নতুন মহামারির আশঙ্কায় বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তখন এমন একটি খবর গোটা বিশ্বের জন্যই এক নতুন আতঙ্কের জন্ম দিলো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে এই ধরনের জৈব অস্ত্র মানুষের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে।

Không có bình luận nào được tìm thấy