চীন-রাশিয়ার হুমকি মোকাবিলায় বিশাল প্রতিরক্ষা প্রকল্প ট্রাম্পের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিলেন যুগান্তকারী প্রতিরক্ষা প্রকল্প ‘গোল্ডেন ডোম’। খরচ ১৭৫ বিলিয়ন ডলার, নেতৃত্বে স্পেস ফোর্স – ..

চীন ও রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সুরক্ষিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উন্মোচন করেছেন এক বিশাল এবং উচ্চ-প্রযুক্তির প্রতিরক্ষা প্রকল্প, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গোল্ডেন ডোম’। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মহাকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি আধুনিক বিশ্বের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং উচ্চাভিলাষী উদ্যোগগুলোর একটি।

১৭৫ বিলিয়ন ডলারের স্যাটেলাইট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

গত ২০ মে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রকল্পের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি জানান, ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পটির নেতৃত্বে থাকবেন ইউএস স্পেস ফোর্সের জেনারেল মাইকেল গেটলাইন। এই নতুন প্রযুক্তি-নির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রকে চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।

ট্রাম্প বলেন, “গোল্ডেন ডোম শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সমগ্র উত্তর আমেরিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ইতোমধ্যে কানাডা এ প্রকল্পে অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে।”

মহাকাশ থেকেই হুমকি শনাক্ত ও প্রতিরোধ

এই প্রতিরক্ষা প্রকল্পের অন্যতম মূল দিক হচ্ছে মহাকাশভিত্তিক একটি স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক গঠন, যা শত্রুপক্ষের যেকোনো আগত ক্ষেপণাস্ত্র বা আক্রমণ আগেই শনাক্ত করে তা ট্র্যাক এবং সম্ভব হলে ধ্বংস করতে পারবে

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি পরিপূর্ণ ‘মিসাইল শিল্ড সিস্টেম’, যেটি ‘স্টার ওয়ারস’ কল্পকাহিনিকেও বাস্তবতার রূপ দিতে পারে। গোল্ডেন ডোম প্রকল্পের লক্ষ্য শুধুই প্রতিরক্ষা নয়, বরং মহাকাশে আধিপত্য বিস্তার করাও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।

বিশ্লেষকদের শঙ্কা ও রাজনৈতিক জটিলতা

যদিও প্রকল্পটির ঘোষণা বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তবে মার্কিন বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক বিরোধ, বাজেট অনুমোদনের জটিলতা এবং প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, “১৭৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পটি মার্কিন অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি এটি আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে।”

প্রকল্পের পেছনে ট্রাম্পের কৌশলগত চিন্তা

ট্রাম্পের প্রশাসনের দাবি, এই প্রকল্প কোনোভাবেই আগ্রাসী নয় বরং শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক উদ্দেশ্যে তৈরি। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা এক নতুন স্তরে পৌঁছাবে। ট্রাম্প বলেন, “আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করা আমাদের প্রথম দায়িত্ব। গোল্ডেন ডোম এই কাজটি করবে নিখুঁতভাবে।”

বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব

গোল্ডেন ডোম প্রকল্পের ফলে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মতো রাষ্ট্রগুলোর প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। চীন এই প্রকল্পকে ‘নতুন স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ ঘোষণা মার্কিন নির্বাচনী রাজনীতিতেও বড় ভূমিকা রাখবে, কারণ এটি তাঁকে আবারো শক্তিশালী এবং জাতীয় নিরাপত্তার রক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করবে।


 

‘গোল্ডেন ডোম’ শুধু একটি প্রতিরক্ষা প্রকল্প নয়, এটি একবিংশ শতাব্দীতে মহাকাশ ভিত্তিক নিরাপত্তার নতুন যুগের সূচনা। যদিও এর সফল বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ, তবুও বিশ্ব রাজনীতিতে এটি এক বিরাট বার্তা হয়ে উঠেছে – যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত, এবং এবার তারা আকাশ থেকে সুরক্ষার কাঁটাতার তৈরি করছে।

没有找到评论


News Card Generator