ঠাকুরগাঁওয়ের বড়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিএনপির নেতা আল্টিমেটাম দিয়েছেন, এরপর অফিসে তালা ঝুলিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফইজুলের অফিসে রোববার দুপুরে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানায়, এই ঘটনার আগে চেয়ারম্যানকে চেয়ার ছাড়তে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন বিএনপির এক নেতা। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, তালা দেওয়া মূলত স্থানীয় নেতাকর্মীদের হাতে ঘটেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশ সদস্যরা জানান, রোববার দুপুরে চেয়ারম্যান ফইজুল অফিসে ছিলেন। দুপুরের পর তিনি অফিস ত্যাগ করলে একদল লোক অফিসের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে খবর পেয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে গ্রাম পুলিশকে তালা ভাঙার নির্দেশ দেন।
এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। গ্রাম পুলিশের সুবেদার খাদেমুল ইসলাম জানান, তালা দিতে আসা দেড়শ’রও বেশি লোক ছিলেন, যারা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী বলে চিহ্নিত হয়েছে।
অপরদিকে, বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহফুজার রহমান দাবি করেছেন, বিএনপির কেউ এই তালা দেওয়ার ঘটনায় জড়িত নয়। তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ জনগণ এ ধরনের কাজ করেছে, বিএনপি এতে কোনো ভূমিকা রাখেনি।”
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে চেয়ার ছাড়ার জন্য সাত দিনের সময় দেন সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল হামিদ। তিনি ওই সময় যুবদলকে ইউনিয়ন কার্যালয় ঘেরাও করার নির্দেশও দেন। এই বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরপরই চেয়ারম্যানের অফিসে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে অফিসে এসে দেখেছি তালা দেওয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা এই কাজ করেছে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা ও পরিষদের মেম্বাররা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ যাচাই শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চেয়ারম্যান দোষী না হলে তার কার্যক্রম আগের মতো চলবে। ইউএনও বলেন, “আমরা সাধারণ জনগণের সেবার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি যেন নির্বিঘ্নে সেবা পৌঁছে।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সবাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে। ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারীরা তাদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকেন।
এই ঘটনাটি নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা ও স্থানীয় শক্তির দ্বন্দ্বের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। বড়গাঁও ইউনিয়নে এই ধরনের পরিস্থিতি স্থানীয় জনগণের মধ্যে দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করেছে। প্রশাসন পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য নিয়মিত তদারকি করছে।