সত্যজিৎ দাস:
বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুশল বরন চক্রবর্তীর পদোন্নতি বাতিলের আদেশকে বেআইনি ও একতরফা উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত মব কর্তৃক একজন সম্মানিত শিক্ষককে হেনস্তা ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনের দাবি অনুযায়ী,গত ৪ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে ড. কুশল বরন চক্রবর্তী তাঁর নির্ধারিত পদোন্নতির মৌখিক সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের দিকে গেলে বহিরাগত কিছু উশৃঙ্খল ব্যক্তি তাঁর পথরোধ করে স্লোগান,অপমান এবং হেনস্তার মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে। এরপর তিনি যখন পরীক্ষা বোর্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন, তখন উপাচার্য, সহ-উপাচার্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সামনেই তাঁকে ‘মব জাস্টিস’-এর শিকার হতে হয়।
বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সভাপতি আশীষ কুমার দাশ বলেন,“ড. চক্রবর্তী একজন সম্মানিত শিক্ষক। তাঁকে যেভাবে অপমানিত ও মানসিকভাবে আঘাত করা হয়েছে, তা শুধু ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নয়,এটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নৈতিক অবস্থান ও নিরাপত্তার প্রশ্নকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।”
বিএসপির বিবৃতিতে আরও বলা হয়,ঘটনা ঘটার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিরাগত উগ্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো তাদের মিথ্যা অভিযোগ একতরফাভাবে আমলে নিয়ে ড. চক্রবর্তীর পদোন্নতির দাপ্তরিক প্রক্রিয়া বাতিল করে। এটি একটি অবিচার এবং প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতা বলে মন্তব্য করেছে দলটি।
বিএসপি দাবি করেছে,সাম্প্রতিক সময় জুড়ে সারা দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দুদের বিরুদ্ধে গুজব, মিথ্যা অভিযোগ ও উগ্রবাদীদের হামলা, লুটপাট, হয়রানির একটি ধারাবাহিক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ড. চক্রবর্তীর ঘটনা তারই ধারাবাহিক অংশ।
বাংলাদেশ সনাতন পার্টি তাদের বিবৃতিতে নিচের দাবিগুলো উত্থাপন করেছে:
১) ড. কুশল বরন চক্রবর্তীর পদোন্নতি বাতিলের আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
২) বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত মব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩) শিক্ষককে হেনস্তা ও পদোন্নতির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার দায়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
৪) দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় হতে হবে।