চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি আবরার ফারাবী স্বীকার করেছেন তিনি ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন, এখন ছাত্রশিবিরে সক্রিয়। তার পুরনো জামায়াত-শিবির সমর্থক পোস্ট নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের শাখা ছাত্রশিবিরের বর্তমান সভাপতি আবরার ফারাবী গত কয়েক বছরে তার রাজনৈতিক জীবনের একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন। তিনি একসময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং নিজের পক্ষ থেকে সেই সময়কাল অস্বীকার করেননি। তবে ২০২২ সালের জুনের পর থেকে ছাত্রলীগ থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনীতির নতুন পথ শুরু করেছেন।
আবরার ফারাবীর নাম প্রথম আলোচনায় আসে যখন ২০২১ ও ২০২২ সালের তার ফেসবুক পোস্টগুলো ভাইরাল হয়, যেখানে জামায়াত-শিবিরকে সমর্থনমূলক বক্তব্য ছিল। বিশেষ করে ‘এন ইউ আবরার ফারাবী’ নামে ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া পোস্টগুলো সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এই পোস্টগুলোতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ পেয়েছে, পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের শুভেচ্ছা জানানোও দেখা গেছে।
২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি এক পোস্টে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শহীদ আলী মরতুজা চৌধুরীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একইভাবে ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর তিনি ড. রবিউল হাসান স্যারের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, তিনি শিবিরের মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছেন এবং ছাত্রলীগের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
আবরার ফারাবী নিজেও একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “২০২২ সালের জুনের ১৭ তারিখ পর্যন্ত আমি ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এরপর ২০২৩ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্রশিবিরে যুক্ত হই এবং সেখান থেকে রাজনীতির নতুন পথ শুরু করি।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আবরার ফারাবীর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মূলত ২০২১-২২ সালের পোস্ট এবং সে সময় তিনি ছাত্রলীগে ছিলেন। তবে এখন তিনি ছাত্রশিবিরের নিয়ম মেনে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ইতোমধ্যে ২০২৪ সালের শুরু থেকে সোহরাওয়ার্দী হল শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
জানুয়ারি ২০২৫ থেকে তাকে অফিসিয়ালি সোহরাওয়ার্দী হল শাখার সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি ছাত্রশিবিরের মাধ্যমে মানোন্নয়ন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। একই সঙ্গে ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে পরিচিত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে বক্তব্য প্রদান করছেন।
আবরার ফারাবীর রাজনৈতিক জীবনের এই পরিবর্তন ও তার পুরনো পোস্টগুলো নিয়ে এখনো নানা মতপ্রকাশ ও সমালোচনা চলছেই। তবে তিনি নিজেকে নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।