ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের লিখিত অভিযোগ করেছেন এ এফ রহমান হলের স্বতন্ত্র জিএস প্রার্থী আশিকুল হক রিফাত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এবার অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন ছাত্রদল মনোনীত সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তার বিরুদ্ধে সরাসরি অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ তুলেছেন এ এফ রহমান হলের স্বতন্ত্র সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী আশিকুল হক রিফাত।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন রিফাত। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত সোমবার (২৫ আগস্ট) মধুর ক্যান্টিন এলাকায় আয়োজিত ছাত্রদলের এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও প্রমাণহীন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিফাত বলেন, “সংবাদ সম্মেলনে আমাকে উদ্দেশ্য করে সরাসরি অভিযোগ তোলা হয় যে আমি নাকি ছাত্রদল প্যানেলের হয়ে কাজ করা শিক্ষার্থীদের বাধা দিচ্ছি, ভয়ভীতি দেখাচ্ছি এবং ব্ল্যাকমেইল করছি। অথচ এসব অভিযোগের পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। বিষয়টি জানার পর আমি বারবার তাকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দেননি। এমনকি ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি সাড়া দেননি। আমি আসলে সত্যিটাই জানতে চাই— কেন আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হলো।”
আশিকুল হক রিফাত বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং একই সঙ্গে জাতীয় দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
অন্যদিকে, সোমবার মধুর ক্যান্টিনের সামনে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম দাবি করেন, “আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, এ এফ রহমান হলে একজন সাংবাদিক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি নাকি ছাত্রদল সমর্থিত শিক্ষার্থীদের বাধাগ্রস্ত করছেন এবং ভীতি প্রদর্শন করছেন।” যদিও নাম উল্লেখ করা হয়নি, কিন্তু বক্তব্যে যে তাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে তা সহজেই বুঝতে পারেন রিফাত।
এ অভিযোগের বিষয়ে আরও নিশ্চয়তা দেন ছাত্রদল মনোনীত এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ। তিনি বলেন, “অভিযোগটি রিফাতের বিরুদ্ধেই করা হয়েছে। আমরা আগের অবস্থানেই আছি। তবে রিফাতের দেওয়া লিখিত অভিযোগ সম্পর্কেও জেনেছি। এখন তদন্তের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে। আমরা বিশ্বাস করি কমিশনই যথাযথ তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করবে।”
এ প্রসঙ্গে জানতে ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এজিএস প্রার্থী মায়েদের সঙ্গেও কথা বলা হয়। তিনি পুনরায় তাদের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, “আমরা কোনো ব্যক্তিগত আক্রমণ করছি না। তবে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার দায়িত্ব এখন কমিশনের। আমরা বিশ্বাস করি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ বিষয়টির সুরাহা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা ধরনের রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভিপি পদে ছাত্রদল প্রার্থীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকের আশঙ্কা, এ ধরনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নির্বাচনের পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
অভিযোগের তদন্তে নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ নেয় তা এখন সবার নজরে। শিক্ষার্থীরা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন।