বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একপ্রকার গুঞ্জনের ঝড় বইছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে, ছাত্রদল সভাপতি রাকিব পদ হারিয়েছেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নতুন সভাপতি আফসান। এই দাবিকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ধরনের আলোচনা, বিশ্লেষণ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
তবে এই গুজবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব কোনো পদ হারাননি, বরং তিনি কয়েকদিন ধরে ঠাণ্ডা জ্বরে ভুগছেন এবং বিশ্রামে রয়েছেন। নাসির বলেন, "টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিতে ভিজে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কারণে রাকিব ভাই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই আজ তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি।"
এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজবের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নাসির আরও বলেন, “ছাত্রদলের সভাপতির শারীরিক অসুস্থতার এই সময়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এটি একটি পরিকল্পিত প্রপাগাণ্ডা, যাতে দলের অভ্যন্তরে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।” তিনি দলের নেতা-কর্মীসহ সবাইকে এ ধরনের ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে মুজাহিদ বিল্লাহ নামের একজন ফেসবুকে লেখেন, “সিনিয়রদের সাথে বেয়াদবি করায় পদ হারালেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিব, নতুন সভাপতি আফসান।” এই একটি পোস্ট থেকেই শুরু হয় জল্পনা-কল্পনার সূত্রপাত। এরপর একে একে বিভিন্ন পেজ, গ্রুপ ও ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে গুজবটি ছড়ানো হয়।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাসিরের এই দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এ ঘটনা নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে সোশ্যাল মিডিয়ার ভুল তথ্য কীভাবে মুহূর্তে বড় ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
এদিকে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, রাকিবের শরীরিক অবস্থা গুরুতর নয়, তিনি বাসায় বিশ্রামে আছেন এবং দ্রুতই সেরে উঠবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্রদলের মতো সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিকে ঘিরে এমন গুজব ছড়ানো একদিকে যেমন ব্যক্তি বিশেষকে হেয় করার প্রচেষ্টা, তেমনি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরিরও ইঙ্গিত বহন করে। দলীয় দায়িত্বশীল নেতারা বিষয়টি আরও গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে।
শেষ পর্যন্ত ছাত্রদল সভাপতি পদে কোনো পরিবর্তন আসেনি—এটি স্পষ্ট হলেও, গুজবের এই আগুন সামাজিক মাধ্যমে কীভাবে বিস্তার লাভ করে এবং বাস্তবতাকে ঢেকে ফেলে, সেটাই এই ঘটনার বড় বার্তা।
