close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ছাত্র আন্দোলন ঘিরে রাজনীতিতে ভূমিকম্প: সালমান এফ রহমান, আমু, মেননসহ হাইপ্রোফাইল ১০ জন গ্রেফতার দেখানো!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজধানীতে ছাত্র আন্দোলনের রেশ কাটতে না কাটতেই বিস্ফোরক মোড়! হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী ও জনপ্রিয় অভিনেত্রীসহ ১০ জনকে। জানুন বিস্তারিত ভিত..

ঢাকা শহরের রাজনীতিতে হঠাৎ করেই নেমে এলো ঝড়! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলায় দেশের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের নাম উঠে আসছে একে একে। সর্বশেষ চমকপ্রদ মোড় নেয় বুধবার, যখন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমসহ মোট ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বিভিন্ন থানার হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় ‘গ্রেফতার’ দেখানোর আদেশ দেন আদালত।

এদিন সকাল ৯টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় তাদের নিয়ে আসা হয়। পরে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে তাদের হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন পেশ করলে শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক সেটি মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাকাণ্ডের মামলায় আমির হোসেন আমু, সালমান এফ রহমান, ডা. দীপু মনি, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, হাজী সেলিম এবং পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ২১ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে যাত্রাবাড়ীর একটি ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্র ও জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সাজেদুর রহমান ওমর। আন্দোলনের একপর্যায়ে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীর্ঘ এক মাস পর, ২৪ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে, শাহবাগ থানার মনির হোসেন হত্যা মামলায় রাশেদ খান মেননকে, ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে, মোহাম্মদপুর থানার মামলায় সাদেক খানকে এবং উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের হওয়া জুবায়ের ইউসুফ হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী ও ব্যবসায়ী শমী কায়সারকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ গ্রেফতার দেখানো ব্যক্তিরা শুধু রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী নন, কেউ কেউ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন। যেমন সালমান এফ রহমান ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। অন্যদিকে, আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতা হিসেবে পরিচিত।

নেতাকর্মীদের একাংশ এই ঘটনাকে 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা' হিসেবে বর্ণনা করলেও, পুলিশের বক্তব্য ভিন্ন। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, এই মামলাগুলোর তদন্তে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা থেকে স্পষ্ট হয় অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই গ্রেফতার কার্যক্রম ভবিষ্যতে দেশের রাজনীতিতে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে। কারণ একটি ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা যদি হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত হন, তাহলে এ নিয়ে দেশে ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে গ্রেফতার দেখানোর এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভেতরে প্রতিক্রিয়া এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, দলের ভেতরে ও বাইরে সমীকরণ পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

এখন দেখার বিষয়, আদালতের এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে আগামী দিনে কী পদক্ষেপ নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এর কী প্রভাব পড়ে।

לא נמצאו הערות