close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

চার মাসেই রাজস্ব ঘাটতি ৩১ হাজার কোটি টাকা: অর্থনীতির অস্থিরতায় বাজেট বাস্তবায়নে সংকট

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকার বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতির মুখে পড়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এই ঘাটতির কারণে
সরকার বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতির মুখে পড়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এই ঘাটতির কারণে বাজেট বাস্তবায়নে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট এবং রপ্তানি আয়ের নিম্নমুখী প্রবণতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর সাথে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ১ হাজার ২৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এ সময়ের মধ্যে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৩ শতাংশ। অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এতে মাসিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। খাতভিত্তিক ঘাটতির চিত্র: ১. আয়কর খাত: আয়কর খাতে চার মাসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। তবে আদায় হয়েছে মাত্র ৩১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। ২. আমদানি-রপ্তানি খাত: এই খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ঘাটতির পরিমাণ ৬ হাজার ৯৬০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। ৩. ভ্যাট (মূসক) খাত: ভ্যাট খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার ৭২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এই খাতে ঘাটতি ১০ হাজার ৫০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা এবং নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.৮৮ শতাংশ। বাজেট বাস্তবায়নে শঙ্কা: সরকারের অর্থবিভাগ জানায়, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এডিপি বাস্তবায়নের গতি কমে গেছে। বাজেট বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে সংশোধিত বাজেট প্রণয়নে ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: উন্নয়ন প্রকল্পের সংখ্যা সীমিত রাখা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন। বরাদ্দহীন প্রকল্প বাতিল করা। অর্থনীতিবিদদের মত: সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, "সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ জরুরি। বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।" পর্যালোচনা: চলমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারকে অর্থনৈতিক খাতে দ্রুততর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলা, বাজেট বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা এবং সাধারণ মানুষের জন্য মূল্যস্ফীতির চাপ কমানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
No se encontraron comentarios