জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস চলতি বছরের ১৩ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তিনি ১৬ মার্চ পর্যন্ত চার দিনের জন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ সফরের কারণ ও আমন্ত্রণের পেছনের গল্প
জাতিসংঘের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে অ্যান্তনিও গুতেরেস এই সফরে আসছেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় রোহিঙ্গা সংকট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এই বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিবের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান।
সফরের মূল বিষয়বস্তু
জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে বাংলাদেশের শরণার্থী সংকট পর্যালোচনা করা। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন এবং সেখানে থাকা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
এর আগে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ জানিয়েছিলেন যে, মহাসচিব মার্চের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সফর করবেন এবং এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করা। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন।
রোহিঙ্গা সংকট ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং নতুন দাতাদের সম্পৃক্ত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যেখানে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে গভীর আলোচনা হবে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী জুলি বিশপকে সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এই সম্মেলনের সহযোগী হতে সম্মত হয়েছে।’
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের বিশেষ দূতের কাছে রাখাইন রাজ্যের মানবিক সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। এছাড়া মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা নতুন শরণার্থীদের আগমন রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়।
এ বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির নতুন দিকনির্দেশনার ফলে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় নতুন দাতা সংগ্রহের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
জাতিসংঘের দূত বিশপ জানান, রোহিঙ্গা বিষয়ে আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দীর্ঘমেয়াদী সংকট সমাধানে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হবে।