close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধীর দুই ছাত্র প্রতিনিধি আটক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চাঁদাবাজি, পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ এবং ফেক ফেসবুক পেইজের সঙ্গে যোগসাজশ—এই সব অভিযোগে মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই শীর্ষ নেতা আটক। ঘটনাটি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ..

মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা গ্রেপ্তার: চাঁদাবাজি, ফেক পেইজ ও পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে উত্তাল পরিস্থিতি

মানিকগঞ্জ জেলার ছাত্র ও তরুণ সমাজকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আলোচিত সংগঠন “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” এবার বিতর্কের মুখে। সংগঠনের দুই প্রতিনিধি, মেহেরাব হোসাইন (১৯) এবং আশরাফুল ইসলাম রাজু (২১)–কে চাঁদাবাজি, পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ এবং একটি ভুয়া ফেসবুক পেইজ পরিচালনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করেছে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটে ২১ মে বুধবার সকালে। সকাল ৮টার দিকে নিজ নিজ বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ।

আটক মেহেরাব হোসাইন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর সেওতা এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে। অপরজন, আশরাফুল ইসলাম রাজু, শিবালয় উপজেলার নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা, তার পিতা রজ্জব আলী।

পুলিশ জানায়, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, মানিকগঞ্জ নিউজ নামের একটি ভুয়া ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো ও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এমনকি তাদের পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগও রয়েছে।

জেলা কমিটির প্রতিক্রিয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মানিকগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ওমর ফারুক সাংবাদিকদের জানান, “পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে জেনেছি। আমাদের সংগঠনের নীতিগতভাবে কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুযোগ নেই। তবে শুনেছি, মেহেরাব ও রাজু দুজনই ইতোমধ্যেই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছে।”

তবে এই বক্তব্য নিয়েও তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। কারণ, অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, সংগঠনের ভেতরে এতবড় অভিযোগ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আগেই কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?

ওসির বক্তব্য
ওসি এস এম আমান উল্লাহ গণমাধ্যমকে জানান, “তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, চাঁদাবাজি ও ভুয়া ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। আমরা তদন্ত করছি। বিস্তারিত তথ্য খুব শিগগিরই প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের কর্মকাণ্ড ছাত্ররাজনীতিকে কলুষিত করে। আমরা চাই, যারা প্রকৃতভাবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে, তারা যেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মত প্রকাশ করে।”

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পরপরই মানিকগঞ্জ শহরজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। কেউ কেউ বলছেন, আন্দোলনের আড়ালে একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে নানা সুবিধা আদায় করে আসছিল। অনেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে নিয়মিত ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’ পরিচয়ে অর্থ দাবি করা হতো।

তবে আটক দুই ছাত্র প্রতিনিধি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তারা ‘উচ্চ পর্যায়ের ষড়যন্ত্রের শিকার।’

তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া চলছে
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে মামলা প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। ফেক পেইজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হলে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় দোষীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেষ কথা
এই ঘটনা শুধু দুইজনের আটক বা একটি সংগঠনের বদনাম নয়—বরং প্রশ্ন তুলেছে, ছাত্র রাজনীতির বর্তমান ধারা ও নেতাদের দায়িত্ববোধ নিয়ে। আন্দোলনের নামে কেউ যেন জনগণের অনুভূতিকে ব্যবহার করে অবৈধ ফায়দা না তুলতে পারে, সে বিষয়ে এখনই কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

コメントがありません


News Card Generator