চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন চাকসু নির্বাচনে ভোটের দিন অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রশাসন ও প্রার্থী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ গঠনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট। তারা বলছে, এতে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ বাড়ছে ক্যাম্পাসজুড়ে। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই ঐতিহাসিক নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’। তারা নির্বাচনের দিনে দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রশাসন ও প্রতিটি প্যানেলের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ গঠনের দাবি তুলেছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “নির্বাচনের দিন তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের সমাধান করার জন্য একটি বিশেষ টিম থাকা অত্যন্ত জরুরি। এতে যেকোনো অভিযোগ দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য, বিভ্রান্তিকর পোস্ট ও সাইবার বুলিং বেড়ে গেছে। অনেক প্রার্থীর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুয়া পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে। অথচ প্রশাসন এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
হাবিব বলেন, “বিভিন্ন প্রার্থী ও সংগঠনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রশাসনের কাছে দাখিল করা হলেও দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও হতাশা বাড়ছে। তাই নির্বাচনের দিনই অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি নিরপেক্ষ ও কার্যকর ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ থাকা অত্যাবশ্যক।”
সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট মনে করে, এই টিম গঠন করা গেলে ভোটের দিনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সহজ হবে এবং ছাত্রসমাজের আস্থা বাড়বে নির্বাচনের প্রতি। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে— নির্বাচনকে ঘিরে যেন কোনো পক্ষপাতিত্ব না হয় এবং প্রতিটি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৫ অক্টোবর (বুধবার) অনুষ্ঠিত হবে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ১৯৮৯ সালের পর এই প্রথম এমন একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যা নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে ক্যাম্পাসজুড়ে। তবে একই সঙ্গে উদ্বেগও আছে— ভোটের দিন সহিংসতা ও অনিয়ম যেন না ঘটে। সেই উদ্বেগ থেকেই সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের এই দাবি এসেছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবে, যারা আগামী দিনের ক্যাম্পাস রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কি সত্যিই শিবির সমর্থিত প্যানেলের এই দাবি বিবেচনা করবে, নাকি আগের মতোই নির্বাচন পরিচালনা করবে পূর্বনির্ধারিত কাঠামোয়।